চট্টগ্রামে নির্মাণ হতে যাচ্ছে চীনা উপহারের ১৫০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। সোমবার বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের এক মাসের মধ্যেই শুরু হবে নির্মাণ কাজ।
শনিবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান।
তিনি জানান, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় চীনা প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে বার্ন হাসপাতাল উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৯ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে ১৫০ শয্যার বিশেষায়িত এই হাসপাতালে তিনটি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, ১০টি আইসিইউ, ২৫টি এইচডিওসহ ১০০টি সাধারণ বার্ন বেড থাকবে।
হাসপাতাল তৈরির বিষয়ে চীনা প্রতিনিধি দল ১২ দিন ধরে নির্ধারিত সাইট পরিদর্শন করেছে। হাসপাতাল ভবনের নকশা অনুযায়ী সবকিছু পরিমাপ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো যাচাই করেছে তারা। এসব বিষয় নিয়ে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, ‘বার্ন একটি সম্পূর্ণ বিশেষায়িত চিকিৎসা ব্যবস্থা। ঢাকায় ইতোমধ্যে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট স্থাপিত হয়েছে। সেটি ৫০০ শয্যার এবং দেশের সর্ববৃহৎ।
‘আমাদের এখানে এটি হবে ১৫০ শয্যার। এখানে বার্ন ইউনিটের অভাব নিয়ে চট্টগ্রাম জেলাসহ পুরো বিভাগের প্রায় তিন কোটি লোকের হাহাকার ছিল। যখন বেশি বার্ন বা এ ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হতো, আমরা সঠিক চিকিৎসা দিতে পারতাম না। সে চিকিৎসা যখন আমরা দিতে পারবো তখন এটি সংমগ্র বাংলাদেশ বিশেষ করে চট্টগ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিশাল পরিবর্তন নিয়ে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের নির্মাণ খরচ থেকে শুরু করে সব যন্ত্রপাতি, ফার্নিচারসহ যাবতীয় সবকিছু চীন সরকার দেবে। শুরুতে আমরা এটি তৈরি অবস্থায় পাব। সেখানে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য জনবল দিয়ে হাসপাতালটিকে চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করব আমরা।’
এ সময় চীন দূতাবাসের দ্বিতীয় সেক্রেটারি শি চেন বলেন, ‘আজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিন। স্থাপনার নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। এখানে বাংলাদেশ সরকারেরও কিছু কাজ রয়েছে। নকশাকারকদের কাছে হাসপাতাল কাঠামোর বিস্তারিত আছে। এখানে আরও অনেক কিছু করার আছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে খুব দ্রুতই সমৃদ্ধ একটি হাসপাতাল পাব আমরা।’
শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার, সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জিয়া উদ্দিন, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।