বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সারা ইসলামের পর মরণোত্তর দেহ দান করেছেন ৬৯ বছর বয়সী নন্দিতা বড়ুয়া, যার কর্নিয়ায় চোখের আলো ফিরে পেয়েছেন দুজন।
তারা হলেন পিরোজপুরের কাউখালী কলেজের ব্যবস্থাপনার বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ২৩ বছর বয়সী ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস ও পটুয়াখালীর ৫০ বছর বয়সী দলিল লেখক আবদুল আজিজ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অ্যানাটমি বিভাগের পক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ নন্দিতা বড়ুয়ার মরণোত্তর দেহ গ্রহণ করেন। ওই সময় তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢাকার বাসাবোর বাসিন্দা নন্দিতা বড়ুয়ার দেহ গ্রহণের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন, অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লায়লা আনজুমান বানু, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শাহ আলম, হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার (টিটো), কর্নিয়া বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শীষ রহমান, কর্নিয়া বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক রাজশ্রী দাস, অ্যানাটমি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শারমিন আক্তার সুমি, নন্দিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া ও সেঁজুতি বড়ুয়া. নন্দিতা বড়ুয়ার কর্নিয়াগ্রহীতা জান্নাতুল ফেরদৌস ও আবদুল আজিজসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে নন্দিতা বড়ুয়ার দুই মেয়ে শাপলা বড়ুয়া ও সেঁজুতি বড়ুয়াও মরণোত্তর দেহদানের ইচ্ছা কথা জানান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন নন্দিতা বড়ুয়ার মৃত্যু হয় ৩০ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছিলেন। কিডনি রোগের পাশাপাশি এসএলই ও ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত ছিলেন। মরণোত্তর দেহদানের বিষয়ে সন্তানদের বলে গিয়েছিলেন তিনি।
গত ৩১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ শীষ রহমান আবদুল আজিজের চোখে ও অপথালমোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজশ্রী দাস জান্নাতুল ফেরদৌসির চোখে নন্দিতা বড়ুয়ার একটি করে কর্নিয়া সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি মরণোত্তর অঙ্গদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন ২০ বছর বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সারা ইসলাম।
- আরও পড়ুন: পুরো দেহটাই দান করে গেছেন সারা
তার দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় দুই নারীর শরীরে। আর কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয় আরও দুজনের চোখে।