বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মানসিক রোগীদের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে: সায়মা ওয়াজেদ

  •    
  • ২৮ ডিসেম্বর, ২০২২ ১৭:৫৫

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘দেশের প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত। শিশুদেরও প্রায় ১২ শতাংশ নানাভাবে মানসিক রোগে আক্রান্ত। তারপরও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। মাত্র দশমিক ৫ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’

‘একজন মানসিক রোগীকে আমরা স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি না। তাকে অবহেলা করি। এক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার সময় মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিকেও বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সামাজিকভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

বুধবার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালায় সূচনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিষয়ক উপদেষ্টা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এসব কথা বলেন।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সায়মা ওয়াজেদ বলেন, ‘মানসিকভাবে অসুস্থ একজন মানুষকে আমরা এমনভাবে গণ্য করি যেন তিনি জীবনভর চিকিৎসায়ও সুস্থ হবেন না। এভাবে তার মানসিক শক্তিকে নষ্ট করে দেয়া হয়। তাকে হার মানতে বাধ্য করা হয়।

‘যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে, আমরা চিন্তা করি না কতটা কষ্ট নিয়ে সে এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার এমন পদক্ষেপের পেছনে কী কী কারণ ছিল সেগুলো খোঁজার চেষ্টা করি না।

‘মেন্টাল হেলথ অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য কী সেটাই আমরা বুঝি না। শরীরের সঙ্গে মনেরও যত্ন নিতে হবে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া একজন মানুষের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমি গর্ববোধ করি যে বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাপক কাজ হচ্ছে। কিন্তু সেগুলো কার্যকর করতে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গী এখনও পুরোপুরি বদলায়নি। আমাদের অনেক ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু পরিবর্তন আমাদেরকেই আনতে হবে।

‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কাজ করতে হবে। আমরা আজ থেকেই যদি শুরু করি, আমরা পারব আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘এতোদিন আমরা শারীরিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ, ৩৮টি ইনস্টিটিউট, ওষুধ ও ভ্যাকসিনেশন করতে হয়েছে। এই কাজগুলো আমরা সফলতার সঙ্গে করে চলেছি।

‘আমাদের দেশে প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। শিশুদেরও প্রায় ১২ শতাংশ নানাভাবে মানসিক রোগে আক্রান্ত। তারপরও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি এখনও সেভাবে গুরুত্ব পায়নি। অথচ মানসিকভাবে সুস্থ না থাকলে একজন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ থাকতে পারে না।’

সায়মা ওয়াজেদের অবদান উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অটিজম নিয়ে চিকিসার ধারণা আগে ছিলো না বললেই চলে। তারই উদ্যোগে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আইন পাস হয়েছে, পলিসি তৈরি হয়েছে, ডকুমেন্ট তৈরি হয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা ভালোভাবে কাজ করলে এই উদ্যোগ কার্যকর করা সহজ হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দারিদ্র্য, মহামারির মতো নানা কারণে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলো। আবার বিয়ে বিচ্ছেদের মতো ঘটনায়ও অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এই জায়গাগুলো থেকে তাদেরকে বের করে আনতে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা জানি চিকিৎসার ঘাটতি রয়েছে ৮৯-৯০ শতাংশ।

‘আমাদের বাজেটে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য বরাদ্দ রয়েছে দশমিক ৫ শতাংশ, যা খুবই কম। যেখানে দেশের ১৮ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে মানসিক রোগে আক্রান্ত, সেখানে এত কম বাজেট আর চিকিৎসক দিয়ে এই সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। সেজন্য এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক খুরশিদ আলম বলেন, ‘পাবনা মানসিক হাসপাতালকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলার জন্য পরিকল্পনা পাস হয়েছে। সেখানে প্রয়োজন অনুযায়ী লোকবল নিয়োগ দেয়া হবে।

‘আমরা সবকিছু যদি কমিউনিটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই তাহলে হবে না। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেট বাড়াতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর