মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া এবং দেরিতে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা শুরু করায় এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেশি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সচিবালয়ে সোমবার নেপাল এবং সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্টাডিতে দেখেছি, যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে আসার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে। তারা চিকিৎসা শুরু করতে দেরি করেছেন। যারা বেশি সময় হাসপাতাল থাকার সুযোগ পেয়েছেন তাদের মৃত্যুহার কম।’
দেশের অন্য এলাকার তুলনায় ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় মশার উৎপাত বেশি বলেও মন্তব্য করেন জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘বারিধারায় থাকি, এখানেও অনেক মশা। আমাদের সচেতন হতে হবে। নিজের বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। গ্রামে কিন্তু এত মশা নেই। সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কম। এটা ঢাকা শহরেই বেশি।
‘সিটি করপোরেশন থেকে বেশি নজরদারি করলে আশা করি কমে আসবে। যদিও তারা চেষ্টা করছে, স্প্রে করছে। তবে যে পরিমাণে দেয়ার কথা সে পরিমাণ হয়তো দেয়া সম্ভব হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ডেঙ্গু দেশে অনেক বেড়ে গিয়েছিল। মৃত্যুর হারও বেড়ে গিয়েছিল। আশেপাশের দেশেও বেড়ে গিয়েছিল। এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার রোগী আমরা পেয়েছি৷ এরমধ্যে ৩৬ হাজার ঢাকার, সিটি করপোরেশনের মধ্যে। এখানে ড্রেনেজ সিস্টেম বেশি, পানিও জমে থাকে বেশি। এসব জায়গায় স্প্রে করা প্রয়োজন।
‘আগে ১ হাজার রোগী প্রতিদিন আসতো। এখন ৪০০ করে ভর্তি হচ্ছে। মৃত্যুর হারও কমেছে। যে ট্রেন্ডটা দেখছি কমে আসবে।’
শীতের আগে আগে বছরের যে সময়ে দেশে ডেঙ্গুরোগী দেখা যায় না, সেই সময়েই এবার সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে মানুষ। অক্টোবর মাসও ছিল ভয়ঙ্কর, সে মাসে মৃত্যু হয় ৮৬ জনের।
সর্বশেষ রোববার তিনজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারা জানায়, এদিন সকাল পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২০৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০২ জন।
বর্তমানে সারা দেশে ১ হাজার ৪৬৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৪১ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ৬২২ জন রোগী রয়েছেন। সবমিলিয়ে এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৫৭ জন মারা গেছেন।
অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৮ হাজার ৬১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৭ হাজার ২১৮ জন ও ঢাকার বাইরে সারা দেশে ২১ হাজার ৪০১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।