‘দেশে বিক্রীত তামাকজাত পণ্যের ওপর কর আরও বাড়াতে হবে। আর তাতে করে এসব পণ্যের দাম বাড়বে আর ভোক্তার সংখ্যা কমে আসবে।’
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক ডা. মাহবুব সোবহান বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
‘তামাক কোম্পানির বহুল প্রচারিত রাজস্ব মিথ এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট।
লিখিত বক্তব্যে ডা. মাহবুব সোবহান বলেন, ‘বহুজাতিক সিগারেট কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত আইন ভঙ্গ করে তামাকের ব্যবহার বৃদ্ধি, কর ফাঁকিসহ নানা অপচেষ্টা করে যাচ্ছে।
‘প্রতিবছর খুব কম পরিমাণে কর বৃদ্ধি পেলেও প্রচলিত কর কাঠামোর ত্রুটির কারণে তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় মূল্য আদতে ভোক্তার নাগালের মধ্যেই থেকে যাচ্ছে। অথচ কর ও মূল্য বৃদ্ধি তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত।’
তিনি বলেন, ‘শুধু কর বৃদ্ধির ফলেই ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে ইউরোপের ৪১টি দেশের ৩৫ লক্ষাধিক মানুষকে তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
‘সিগারেটের খুচরা বিক্রি বন্ধ ও মূল্য বৃদ্ধি করলে ধূমপায়ীর সংখ্যা কমবে। সরকারের আয়ও বাড়বে। সিগারেটের প্যাকেটে মুদ্রিত খুচরা মূল্যের আগে-পরে সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন শব্দ উল্লেখিত না থাকায় এবং খুচরা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের সুযোগ নিয়ে স্থানভেদে পণ্যের মোড়কে মুদ্রিত মূল্যের থেকে অধিক মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হচ্ছে। এই অতিরিক্ত মূল্যের উপর কোনো প্রকার কর ধার্য না হওয়ায় কারণে প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ক্যানসার বিশেষজ্ঞ গোলাম মহিউদ্দিন ফারুখ বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনো আলাদা ডেটা নেই, যেখানে দাম বাড়ালেই সিগারেট খাওয়া কমে যাবে। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় ৪৩ ভাগ ধূমপায়ী থেকে কমে ৩৫ ভাগে নেমে এসেছে।
‘আমরা বিভিন্ন দিক থেকে কাজ করে যাচ্ছি। আর তার একটা সামগ্রিক প্রতিফলন হয়েছে। সরাসরি ট্যাক্স বাড়িয়ে কত কমেছে সেই পরিসংখ্যান আমাদের কাছে নেই।’