ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ওয়ার্ডে জায়গা পেয়ে অনেকে বারান্দা ও মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এবারের ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ময়মনসিংহ মেডিক্যালের চিকিৎসকরা। জানান, ডেঙ্গু আক্রান্তরা সহজে ভালো হচ্ছেন না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ডেঙ্গু আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৫০ রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে শনিবার ভর্তি হন ১৩ জন। প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে পাঁচজন নারী, তিনজন শিশু এবং বাকি পুরুষ। হাসপাতালে থাকা অন্তত ১০ রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
হাসপাতালে দেখা যায়, ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় অনেকে বারান্দা ও মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারো জ্বর, কারো জ্বরসহ বমি বমি ভাব, আবার পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ায় হাসপাতালে মাত্র ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের বেশিরভাগ ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের রোগী।
সাইদুল ইসলাম নামে এক ডেঙ্গু রোগী বলেন, ‘ঢাকা থেকে এসেছি। টানা পাঁচদিন জ্বরসহ বমি ছিল। সাতদিন জ্বরে ভুগে পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হই।’
সোহেল মিয়া নামে আরেক রোগী বলেন, ‘জ্বরের সঙ্গে প্রচন্ড মাথাব্যথা ছিল। পরে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসা নিচ্ছি, কোনো পরিবর্তন নেই।’
হাসপাতালের ডেঙ্গু ইউনিটের ফোকাল পারসন ডা. কায়সার ইমরান সোহেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০১৯ সালের পর চলতি বছর ডেঙ্গুর ভয়াবহতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ডেঙ্গু ধরন পাল্টিয়েছে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিলেও অনেকে ভালো হচ্ছে না। একাধিক ব্যক্তি বারবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত দুই মাসে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নভেম্বর মাসে সাধারণত ডেঙ্গু রোগী থাকে না। এ বছর চিত্র ভিন্ন। এবার ডেঙ্গুর ধরন নিয়ে আমরা শঙ্কিত। আক্রান্তরা সহজে ভালো হচ্ছে না।’
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য ওষুধসহ সব ধরনের ব্যবস্থাপনা রয়েছে। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা রোগীদের সেবায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছেন। কয়েক দিনের মধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আরও বাড়লে বেডের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।’
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যারা ভর্তি আছেন, তারা সবাই অন্য জেরার থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। ময়মনসিংহ নগরীর কেউ এখনও আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি। ডেঙ্গু সচেতনতা বাড়াতে মাইকিং করা হচ্ছে।