ডেঙ্গুতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আগেই হয়েছিল। এবার সংখ্যাটি ছাড়াল দুই শর ঘর। এর মধ্যে চলতি মাসের ১৩ দিনই মারা গেল ৬১ জন।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় তিনজন মিলিয়ে এই ভাইরাস জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২০২-এ। গত ২২ বছর ধরে রাখা পরিসংখ্যানে এর আগে কখনও এত বেশি মানুষ মারা যায়নি।
এই জ্বরের প্রকোপ সাধারণত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকলেও নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হতে চললেও প্রতিদিনই মৃত্যুর খবর আসছে, সেই সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শত শত মানুষ।
চলতি মাসে এমন একটি দিনও যায়নি যেদিন কোনো রোগী মারা যায়নি। অক্টোবরে যত মৃত্যু হয়েছিল, নভেম্বর তাকেও ছাড়িয়ে যায় কি না, সে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৫৯ জন।
এদের প্রায় অর্ধেক বা ৪২৬ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ৪৩৩ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে।
বর্তমানে সারা দেশে ৩ হাজার ১৮৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৮৮৫ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ৩০৪ জন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৮ হাজার ৫২৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩১ হাজার ৭৩৮ ও ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৭৯১ জন।
চলতি বছর ডেঙ্গুর সবচেয়ে বেশি প্রকোপ হয়েছে অক্টোবরে। মৃত্যুও হয়েছে এই মাসেই সবচেয়ে বেশি।
মাসটিতে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২১ হাজার ৯৩২ জন রোগী, এদের মধ্যে মারা যায় ৮৬ জন। এর আগে সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত হয় ৯ হাজার ৯১১ জনের।
চলতি নভেম্বরে এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি বিরল হলেও মাসের অর্ধেক যেতে না যেতেই ১০ হাজার ৫০৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
চিকিৎসকরা মৃত্যু বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে হাসপাতালে দেরিতে যাওয়া, লক্ষণ হিসেবে জ্বরের বদলে অন্য কিছু প্রকাশ পাওয়াসহ নানা কারণকে দায়ী করছেন। জ্বর হলেই দেরি না করে সরাসরি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।