বর্ষা মৌসুম শেষে ডেঙ্গুর বিস্তার থামার কথা। উল্টো শরৎ পেরিয়ে এখন হেমন্তে বেড়েছে তার গতি। প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। এ অবস্থায় দেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যে রেকর্ড গড়েছিল, তা ছাড়িয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮২০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
তাতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৫০ জন ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৭০ জন ডেঙ্গু রোগী।
বর্তমানে সারা দেশে ৩ হাজার ২২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৯৪৭ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ১ হাজার ২৭৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের মৃত্যুসহ এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মোট ১৮২ জনের। ২০১৯-এ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৮৯ জনের। সেক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বলে ধরে নেয়া যায়।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪ হাজার ৮০২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৯ হাজার ৬৯৮ ও ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ১০৪ জন।
২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয় ১৮৯ জনের। অর্থাৎ শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ছিল ০.১৮ শতাংশ। অর্থাৎ সে বছর প্রতি এক হাজার রোগীর মধ্যে ১ দশমিক ৮ জন মারা যায়।
২০২০ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১ হাজার ৪০৫ জন, মৃত্যু হয় সাতজনের। শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার ছিল ০.৪৯ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি এক হাজার রোগীর মধ্যে প্রায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
২০২১ সালে শনাক্ত বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৪২৯ জনে। মৃত্যু লাফ দিয়ে হয় ১০৫ জনে। শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুহার হয় ০.৩৭ শতাংশ।
চলতি বছর রোগী শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুর হার বেশি। যা ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সে কারণে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ।