শীতের আগে আগে ডেঙ্গুর যে বিস্তার তাতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৪১ জনের মৃত্যু হলো।
এই মৃত্যুর সিংহভাগই হলো অক্টোবর মাসে, সংখ্যাটি ৮৬, যা বছরের মোট মৃত্যুর ৬০ শতাংশ। এর আগে কখনও এই মাসে রোগটিতে এত বেশি মৃত্যু দেখেনি দেশ।
কেবল মৃত্যু নয়, অক্টোবরে রেকর্ড হয়েছে রোগী ভর্তিতেও। এই একটি মাসেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২১ হাজার ৯৩২ জন, যা বছরের মোট আক্রান্তের ৫৭ শতাংশ।
বর্ষায় এই রোগটির প্রকোপ দেখা গেলেও এবার স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি শেষে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয় সেপ্টেম্বরে। ওই মাসে রোগী পাওয়া যায় ৯ হাজার ৯১১ জন।
অর্থাৎ এই দুই মাসেই বছরের মোট রোগীর ৮০ শতাংশের বেশি পাওয়া গেছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক বিবৃতির তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৭৩ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ৫৪৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৩২৮ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে সারা দেশে ৩ হাজার ৫৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি হাসপাতালে ২ হাজার ৩০৯ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ২৭৫ জন।
এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮ হাজার ২৪ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬ হাজার ১৬ জন এবং ঢাকার বাইরে সারা দেশে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৮ জন।
একই সময়ে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৩৪ হাজার ২৯৯ জন। এদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে সুস্থ হয়েছেন ২৩ হাজার ৬২৩ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৬৭৬ জন।
ডেঙ্গুতে এবার এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯-এ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয় রেকর্ড ১৮৯ জনের। অর্থাৎ শনাক্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ছিল ০.১৮ শতাংশ। অর্থাৎ সে বছর প্রতি এক হাজার রোগীর মধ্যে ১ দশমিক ৮ জন মারা যায়।
এবার রোগী কম হলেও মৃত্যুতে রেকর্ডের শঙ্কা করা হচ্ছে এ কারণে যে, এবার শনাক্তের বিপরীতে মৃত্যুর হার তিন বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণ। আর বছরের যে সময়টায় মৃত্যু অস্বাভাবিক, সেখানে প্রতিদিনই বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হচ্ছে।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর বিপরীতে মৃত্যুর হার ০.৩৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি এক হাজার রোগীর মধ্যে মারা যাচ্ছে ৩ দশমিক ৭০ জন।