বর্ণাঢ্য আয়োজনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) চতুর্থ গবেষণা দিবস পালিত হয়েছে বৃহস্পতিবার।
দিবসটির কর্মসূচি মধ্যে ছিল- শোভাযাত্রা, গবেষণা পোস্টারিং, ওরাল প্রেজেন্টেশন, মিট দ্য প্রেস, গবেষণা অ্যাওয়ার্ড প্রদান ও আলোচনা সভা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে সকাল ৮টায় শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে বটতলা, টিএসসি, এ-ব্লক, ডি-ব্লক, সি-ব্লক ঘুরে কেবিন ব্লকে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বৈজ্ঞানিক অধিবেশন ও পোস্টার প্রেজেন্টেশনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক-গবেষকরা। বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে ১০টি ওরাল প্রেজেন্টেশন ও ২০টি পোস্টার প্রেজেন্টেশন করা হয়। ১০টায় মিট দ্য প্রেস ও ১১টায় ছিল আলোচনা সভা।
এ বছর শ্রেষ্ঠ গবেষণার জন্য কয়েকশ’ গবেষকের মাঝ থেকে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, মেডিক্যাল অফিসারসহ ১৬ জনকে গবেষণা পদক বা রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিতে গবেষণার বিকল্প নেই। গবেষণার ধারা অব্যাহত না রাখতে পারলে দেশ পিছিয়ে যাবে। তরুণ চিকিৎসকরা গবেষণার মাধ্যমে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিক দিয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
সভাপতির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গবেষণার বিকল্প নেই। শুধু ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারলেই বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।
‘বিএসএমএমইউ-তে গবেষণা কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে উপাচার্য অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। গবেষণা ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, চিকিৎসকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের চাহিদা পূরণে গবেষণা খাতে বছরে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে গবেষণা খাতে বরাদ্দ পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়াও গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চলতি শিক্ষাবর্ষে একসঙ্গে ২৪ গবেষক-চিকিৎসককে পিএইচডি কোর্সে এনরোলমেন্ট করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সমন্বিত গবেষণা পুরস্কারের ২০ শতাংশ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টরা অর্জন করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দিল আফরোজ বেগম। তিনি বলেন, ‘বিশ্বমানের চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসা সেবা ও গবেষণার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সহায়তা দেয়া হবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমআরসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোদাদ্দের আলী বলেন, ‘গবেষণায় ইথিক্যাল পার্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই গবেষণার ক্ষেত্রে ইথিক্যাল মানদণ্ড বজায় রাখতে হবে।’
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনে (বিএমএ) সভাপতি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন বলেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে বিএসএমএমইউ-এর উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় এই বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করছে। গবেষণা দিবস পালনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, কর্মচারীবৃন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।