বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চিকিৎসায় বিদেশ যেতে হবে না, আসা লাগবে না ঢাকাতেও: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:৫৮

‘আমরা নিউরো, অর্থোপেডিক, মেন্টাল হেলথ এবং স্কিনের চিকিৎসার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। ডিপিপি হয়ে গেছে। বিদেশে আর কাউকে দৌড়াতে হবে না। বাংলাদেশে বিশ্বমানের ওষুধ তৈরি হচ্ছে। এক্সপার্ট হচ্ছে। এটিও সরকারের অনেক বড় সফলতা।’

স্বাস্থ্য খাতে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন বলেছেন, চিকিৎসার জন্য রোগীদের আর বিদেশে যেতে হবে না। এমনকি মফস্বল থেকে ঢাকাতেও আসা লাগবে না।

বাংলাদেশের চিকিৎসকদের আচরণ ও হাসপাতালের পরিবেশের কারণে রোগীরা দেশের বাইরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, এমন বক্তব্য রাখার দুই সপ্তাহের মাথায় এই বিপরীত বক্তব্য এলো তার পক্ষ থেকে।

বুধবার শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলছিলেন তিনি।

দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার ‍উন্নতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে হার্টের চিকিৎসা ভালো হচ্ছে। কিডনির বিশেষায়িত চিকিৎসা হচ্ছে। বার্ন ইনস্টিটিউটে এখন দেশের সব জায়গা থেকে মারাত্মক দগ্ধ রোগীরা আসছে।

‘নিউরো সায়েন্সে দেশে এখন যেভাবে চিকিৎসা হচ্ছে, সেগুলো আগে ছিল না। এগুলো প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে হয়েছে। আমরা সারা দেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করছি যেন চিকিৎসার জন্য ঢাকাতেই দীর্ঘ সময় ধরে কাউকে আসতে না হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিউরো, অর্থোপেডিক, মেন্টাল হেলথ এবং স্কিনের চিকিৎসার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। ডিপিপি হয়ে গেছে। বিদেশে আর কাউকে দৌড়াতে হবে না। বাংলাদেশে বিশ্বমানের ওষুধ তৈরি হচ্ছে। এক্সপার্ট হচ্ছে। এটিও সরকারের অনেক বড় সফলতা।’

মন্ত্রীর এই বক্তব্য ১০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন করতে গিয়ে দেয়া বক্তব্যের পুরো বিপরীত। সেদিন তিনি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর যেসব সমস্যা, সেগুলোর প্রায় সব তুলে ধরে নিজেই তুলাধুনা করেন।

সেদিন তিনি জানান, কেবল ভালো ব্যবহার ও পরিচ্ছন্নতার অভাবে দেশ থেকে হাজারো মানুষ ভারত, সিঙ্গাপুর বা থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে।’

সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে অনেক টেস্টিং মেশিন কেনা হয়েছে, কিন্তু মেশিনগুলো হয় নষ্ট হয়েছে, না হয় মেশিন চালানোর লোক নেই। অনেকেই আবার ঠিকমতো অফিস করেন না। হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয় না। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন নয়। সময়ের কাজ সময় মতো হচ্ছে না। এগুলো তো মেনে নেয়া যাবে না। জনগণের টাকায় এই সরকারি হাসপাতালগুলো নির্মাণ করা হয়েছে, তাহলে জনগণের চিকিৎসা সেবায় ঘাটতি থাকে কীভাবে?’

সরকারের পাঠানো যন্ত্র বসিয়ে রাখা, চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের ঠিকমতো অফিস না করা, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ‘এগুলো মেনে নেয়া যাবে না।’

১৬ দিন পর মন্ত্রী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটের আরেকটি ভবন উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই ইনস্টিটিউটের নাম দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করুন।’

তিনি বলেন, ‘একটি আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবাদান প্রতিষ্ঠান হোক। সেই লক্ষ্যে যা যা করতে হয় আমরা করব। এই প্রতিষ্ঠানের অনেক সমস্যা ছিল। কনস্ট্রাকশনের সমস্যা ছিল। ধীরে ধীরে উন্নয়ন করা হয়েছে।’

দেশে পেটের পীড়ার সমস্যার সুচিকিৎসা সব জায়গায় নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতালটির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে আমরা প্রসংশা পাই। আমরা চাই সেবাদানেও সেই জায়গাটা অর্জন করুক।

‘যন্ত্রপাতির কিছু অভাব ছিল। যন্ত্রপাতি দুইভাগে আনা হয়েছে। একবারে আনলে হয়তো আরও তাড়াতাড়ি চিকিৎসার কাজ অগ্রসর হতো। এখানে প্রায় ৫০০টি অপারেশন হয়েছে। যেগুলো অনেক জটিল ছিল।’

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষায় দেশ বেশ অগ্রগতি লাভ করেছে। অল্প সময়ে এখানে অনেক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বিশেষায়িত চিকিৎসক তৈরি হবে, যারা চিকিৎসা খাতকে লিড করবে।

বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তার নামে হওয়া এই প্রতিষ্ঠানের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। জটিল যেকোনো সমস্যা এবং লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য যেন বিদেশে যেতে না হয় সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, 'আমরা যদি মৃত্যুর কথা মনে রাখি তাহলে চিকিৎসা খাতও উন্নত হবে। আমরা ছুটে বেড়াচ্ছি সারা দেশে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের জন্য। অনেক প্রতিষ্ঠানের সেবা দানে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমাদের কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি যে গ্যাপগুলো আছে, সেগুলো পূরণ করতে।'

‘খাদ্যাভাব এখন সব দেশে’

মন্ত্রী কথা বলেন পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বিদ্যুতের লোডশেডিং নিয়েও।

তিনি বলেন, 'সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। পেট্রলের দাম বেড়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লে সবকিছুর দামই বাড়ে।

'আমি কিছুদিন আগে দেখেছি, আমেরিকার মতো দেশে কিছু অঞ্চলে মানুষের খাদ্যাভাব রয়েছে। আমাদের দেশে মানুষ তিন বেলা খেতে পারছে। বিএনপি ঘোলা পানিতে মৎস্য শিকার করছে। তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। যে সমস্যাগুলো আছে আমরা সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করছি।'

বিদ্যুৎ-সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন একটু লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা কি ভুলে গেছি বিএনপির সময় মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ আসত?’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম শিশির, অধ্যাপক মাহমুদ হাসান এবং আরও অনেকে।

এ বিভাগের আরো খবর