স্বাস্থ্য খাতে ১০ হাজার টাকা ভর্তুকি দেয়ার কথা বলে ফেসবুকে একটি লিংকে ক্লিক করতে মানুষকে প্ররোচিত করার চেষ্টা হচ্ছে, একজন তথ্যপ্রযুক্তিবিদ যাকে একটি ফাঁদ বলে সাবধান করেছেন। তিনি এই ধরনের কোনো লিংকে ক্লিক না করার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, এতে ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারদের হাতে চলে যেতে পারে।
বিষয়টি মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে সরকারের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ওষুধ খাতের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মার ওয়েবসাইটের আদলে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করা হয়েছে। এতে বেক্সিমকো ফার্মার কর্মীদের ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে।
এতে একটি জরিপের কথা বলে কিছু তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে বলা হচ্ছে। এতে করেই ১০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে বলে প্রলোভন দেখানো হচ্ছে।
এরপর ৫ থেকে ২০ জনকে এই লিংকটি পাঠাতে বলা হয়। তারপর ৯টি বক্স থেকে একটি বক্সে ক্লিক করতে বলা হয়।
বক্সটি খোলার পর ১০ হাজার টাকা না থাকলে পরপর আরও দুইবার সুযোগ দেয়া হয়। দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার ১০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল বেরিয়ে আসে।
অংশগ্রহণকারীকে অভিনন্দন জানিয়ে পরের ধাপে আরও কিছু কোড দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করতে বলা হয়।
বেক্সিমকো ফার্মা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, তাদের এমন কোনো কর্মসূচি নেই। কারা কী উদ্দেশ্যে মানুষকে প্রলোভন দেখাচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা নেই কর্মকর্তাদের।
বেক্সিমকো ফার্মার প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা রাউসুদ জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এমন কোনো কিছুর ঘোষণা দিইনি। কে বা কারা করছে সেটা বলতে পারব না।’
ফেসবুকে লিংকে ক্লিক করলেই জরিপে অংশ নেয়ার কথা বলা হচ্ছে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ইকরামুল হক বলেন, ‘আমরা ডিরেক্টরের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। যেহেতু বেক্সিমকো বলছে তারা এ রকম কোনো সার্ভে করছে না, তাই ভবিষ্যতে যেন এ রকম ঘটনা না হয় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার ব্যবস্থা করব।’
তথ্যপ্রযুক্তিবিদের সতর্কতাযে লিংক দিয়ে জরিপে অংশ নেয়ার কথা বলা হচ্ছে, এ ধরনের লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির ইনসিডেন্ট হ্যান্ডেলার হোসাইন সাব্বির। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এসব লিংকে ক্লিক করলে তাদের কাছে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য চলে যায়। সেটি দিয়ে তারা পরবর্তী সময়ে ব্ল্যাকমেল যেমন টাকাপয়সা বা অন্যান্য কিছু দাবি করতে পারে।’
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম বলেন, 'বেক্সিমকো বা সরকারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ এখনও আমাদের কাছে আসেনি। এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’