বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ডেঙ্গু বিস্তারের পরও সফলতার দাবি দুই সিটির

  •    
  • ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:২১

ডিএনসিসির উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল গোলাম মোস্তফা সারওয়ার নিউজবংলাকে বলেন, ‘আমরা সকাল-বিকেল মশা নিধনে কাজ করে যাচ্ছি। এর সুফলও মিলছে। মশা নিয়ন্ত্রণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আমরা অনেকটাই সফল।’

রাজধানীতে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যু। চলতি বছরে এ পর্যন্ত মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৯১ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৩১ জন।

আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীতে আগস্ট মাসে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫২১ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এর আগে জুনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৭১। মারা যান একজন। জুলাই মাসে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ জনে।

তারপরও দুই সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি বছরে তারা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল।

২০ জুলাই রাজধানীতে ডিএনসিসির ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন খিলবাড়িরটেক এলাকায় ডেঙ্গুবিরোধী সচেতনতামূলক প্রচার অভিযানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা

অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম নিয়মিত ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, বছরের শুরুর দিকে রাজধানীতে ডেঙ্গু কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। গত তিন মাস ধরে তা বেড়েই চলেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, রাজধানীতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ করা দুই সিটি করপোরেশন তাদের দায়িত্ব কতটুকু পালন করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল গোলাম মোস্তফা সারওয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকাল-বিকেল মশা নিধনে কাজ করে যাচ্ছি। ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি ডোবা-নালাও পরিষ্কার করে যাচ্ছি। আমাদের কাজে গতি বাড়ানো হয়েছে। এর সুফলও মিলছে।

‘মশা নিয়ন্ত্রণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার আমরা অনেকটাই সফল। গত বছরও আগস্ট মাসে ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় ৮ হাজার। ‌এ বছর সংখ্যাটা সাড়ে ৩ হাজারের মতো। এতে বোঝা যায় আমরা এডিস মশা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।

‘তাছাড়া গত বছর ডেঙ্গু বিষয়ে আমাদের ব্যাপক প্রচারের কারণে মানুষের মাঝেও সচেতনতা বেড়েছে। তারাও নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ছাদবাগান। আমরা লক্ষ্য করেছি এই ছাদবাগানের টবের পানিতেই এডিস মশার বংশবিস্তার বেশি হয়। তাই এই ছাদবাগান পর্যবেক্ষণে আমরা এবার ড্রোন ব্যবহার করছি। সব মিলিয়ে বলতেই পারি যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি আমরা সফল হব।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে নিজেদের সফল বলে দাবি করেছেন। তিনিও বলেছেন গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেকটাই কম।

ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে ছামসুল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মশা নিধনে আমাদের নিয়মিত কর্মতৎপরতা আছে। আমরা সকালে লার্ভিসাইড ও বিকেলে ফগিং কার্যক্রম চালাচ্ছি। মশা নিধনে দক্ষিণ সিটিতে ১ হাজার ৫০ কর্মী নিয়োজিত আছেন। মশা নিধন ও নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত উপকরণও আছে।

গত ২০ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, এখন পর্যন্ত এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আছে। বুধবার দুপুরে নিউমার্কেট-গাউসিয়া ফুটওভার ব্রিজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এ কথা জানান তিনি। ফাইল ছবি

‘বর্তমানে ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে। তার জন্য আমরা নগর ভবনে একটা কন্ট্রোল রুম খুলেছি। আমাদের মেয়র সেটি তদারকি করে থাকেন। এটার মাধ্যমে আমরা আমাদের ৭৫টি ওয়ার্ড মনিটর করছি। আর এসবের কারণেই গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঢাকায় মশা ও ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক কম।’

ডা. ফজলে ছামসুল কবিরও ছাদবাগানকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন। তিনি বলেন, ‘ছাদবাগানে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সব ভবনের ছাদে যাওয়া আমাদের কর্মীদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাড়ির মালিকদের সহযোগিতা পেলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেকটাই এগিয়ে যাব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য না পাওয়ার কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএসসিসির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এডিস মশা। প্রতীকী ছবি

বুধবার আজিমপুরে ফুটওভার ব্রিজ উদ্বোধনকালে মেয়র বলেন, ‘২০১৯ সালের পর ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। আমরা সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

‘আমাদের বিশেষজ্ঞদের অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন যে এবার সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে। কিন্তু দেখা গেছে যে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে কম মানুষ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধেক। মৃত্যুর সংখ্যাও কম। ‘আগস্ট ডেঙ্গুর মৌসুম। আমরা এ মাসেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। এ জন্য আমি ঢাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন।’

ডিএসসিসি মেয়র আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতিকূলতা হলো আমরা এখনও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও উৎসস্থলের পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাইনি। এ জন্য আমাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। এ জন্য আমাদের অন্যান্য জায়গা থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে হয়।

‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু নিয়ে আমাদেরকে নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিলে ডেঙ্গু বৃদ্ধির এখন যে গতি দেখতে পারছি সেটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব বলে মনে করি।’

এ বিভাগের আরো খবর