তিন মাস পর আবারও অনিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধে অভিযানে নেমেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানের প্রথম দিনেই রাজধানীর আটটি অনিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ করা হয়েছে।
রাজধানীতে সোমবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত এ অভিযান চালানো হয়। রাজধানীর বকশীবাজার, উত্তরা, চকবাজার, লালবাগ, যাত্রাবাত্রী, কচুক্ষেত ও বনানীতে একযোগে এই অভিযান চলে। একই সঙ্গে সারা দেশেও অভিযান চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার অভিযানে ঢাকায় বন্ধ করা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো হচ্ছে খিলগাঁও জেনারেল হাসপাতাল, সেন্ট্রাল বাসাবো জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মাতুয়াইলের কনক জেনারেল হাসপাতাল, শনির আখড়ার সালমান হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বকশীবাজারের খিদমাহ লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চানখাঁরপুলের ঢাকা জেনারেল হাসপাতাল, বনানীর হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট কসমেটিক সার্জারি কনসালটেন্সি অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও একই এলাকার ঢাকা পেইন অ্যান্ড স্পাইন সেন্টার।
এর আগে গত ২৬ মে থেকে অনুমোদনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এক মাস ধরে চলা সেই অভিযানে ১ হাজার ৬৪১টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়।
চানখাঁরপুলের ঢাকা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিপিসি) ডা. মুহাম্মদ বিল্লাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন, কোনো প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাওয়ার আগে চালু করার সুযোগ নেই। এই প্রতিষ্ঠান এখনও লাইসেন্স পায়নি। আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি, অপারেশন থিয়েটার থেকে শুরু করে অন্য সব জায়গাতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এখানে মেয়াদোত্তীর্ণ ম্যাটেরিয়াল পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গত জুনে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে এসেছিলাম। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলাম। কিন্তু আইন উপেক্ষা করে তারা আবার চালু করেছে। তারা অপারেশনও করছে। এই প্রতিষ্ঠান আমরা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছি। চলতি অভিযানে আমরা অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এই হাসপাতালে ডাক্তার যাদের নাম পেলেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার সরকারি হোন বা বেসরকারি হোন, তাদের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বিএনডিসির কাছে আমরা এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানাব। অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধিত ডাক্তার প্র্যাক্টিস করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটা আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাব।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়ার কিছুদিন পরই আবার চালু হচ্ছে। এর সমাধানের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিক্যাল অফিসার (এমবিপিসি) দেওয়ান মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের পাওয়ারটা আমাদের হাতে নেই। পুরাতন আইন সংশোধনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। সংসদে পাস হলে নতুন আইনে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার পেতে পারি। আমরা বিভিন্ন ফোরামে অনুরোধ করেছি, আপনার নিবন্ধিত ডাক্তার অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানে কোনো সার্ভিস দেবে না। আমরা তথ্য-উপাত্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে পাঠাব।’