স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে তথ্য ছড়িয়ে পড়া এবং অসংখ্য মামলার মুখোমুখি হওয়ার পর এবার বিশ্বজুড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক স্বাস্থ্যসেবা পণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসনের শিশুদের জন্য তৈরি ট্যালকম পাউডার।
উৎপাদক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অবশ্য আগেই বন্ধ হয়েছে এই পণ্য বিক্রি, এবার অন্য দেশেও এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে এই পাউডার আর বাজারে মিলবে না।
সারাবিশ্বের পরিস্থিতি মূল্যায়নের প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার জনসন অ্যান্ড জনসনের বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী বাজার মূল্যায়নের অংশ হিসেবে কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে এই পাউডার বিক্রি করা হয়েছে৷
এর আগে ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জনসনের ট্যালকম পাউডারের একটি নমুনা পরীক্ষা করলে তাতে কার্সিনোজেনিক ক্রিসোটাইল ফাইবারের অস্তিত্ব মেলে। এটি এক ধরনের অ্যাসবেস্টস, যা ক্যানসার সৃষ্টি করতে পারে।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বাজার থেকে ট্যালকমভিত্তিক বেবি পাউডার প্রত্যাহার করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
জনসন অবশ্য দাবি করে, ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তাই বাধ্য হয়েই পণ্য প্রত্যাহার করা হয়।
জনসন কোম্পানির শিশুদের তৈরি সাবান, শ্যাম্পু, লোশন ও পাউডারসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়। অনেকে নিরাপদ মনে করেই এসব পণ্য কেনেন। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপে যে পাউডার বিক্রি হয় তা মূলত তৈরি হয় ভারতে।
বেবি পাউডার বিক্রি করতে গিয়ে প্রায় ৩৮ হাজার মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে জনসনকে। গুনতে হয়েছে জরিমানাও। তবে বরাবরের মতো এবারও অভিযোগ অস্বীকার করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
জনসন বিবৃতিতে বলেছে, কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো এই পাউডারকে নিরাপদ এবং অ্যাসবেস্টস মুক্ত বলে প্রমাণ করেছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে রয়টার্সের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে বেশ কয়েক দফা পরীক্ষায় অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি ধরা পড়লেও তা গোপন করে বিক্রি চালিয়ে গেছে জনসন অ্যান্ড জনসন।
১৮৯৪ সাল থেকে বিক্রি শুরু হওয়া জনসনের বেবি পাউডার বিশ্বজুড়ে বহু পরিবারের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।