করোনাভাইরাস মহামারির উৎসস্থল হিসেবে পরিচিতি পাওয়া চীনের উহান শহরে এবার কলেরা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।
রাশিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার শহরটিতে কলেরা আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়। এরই মধ্যে কলেরা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ে শনিবার সন্ধ্যায় হালকা জ্বর ও বমিসহ একজন অসুস্থ ব্যক্তির দেহে শহরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে পরিচালিত পরীক্ষাকেন্দ্রে সেরোলজিক্যাল পরীক্ষায় সোমবার কলেরা জীবাণু শনাক্ত হয়েছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলেরা শনাক্তের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি যেই আবাসিক এলাকায় শনাক্ত হয়েছেন, সেই এলাকাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং সেখানে সব ছাত্রের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কার্যকর রোগ শনাক্তকরণ পদ্ধতি ও চিকিৎসার পরে রোগীর অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে এবং তার উপসর্গগুলোও চলে গেছে।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কলেরার বিস্তার ঠেকাতে জরুরি সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। শনাক্ত ব্যক্তির যোগাযোগের সন্ধান, তাদের নমুনা সংগ্রহ এবং জীবাণুমুক্তকরণের মতো পদক্ষেপও নেয়া হয়েছিল।
তবে নতুন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।
উহানের শহর কর্তৃপক্ষ এই গ্রীষ্মে যেকোনো সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে এবং ক্যাম্পাসের স্বাস্থ্যবিধির মান উন্নত করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণকে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধিতে মনোযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে, এ ছাড়া কেউ যাতে গুজবে কান না দেয় সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
কলেরাকে বুবোনিক প্লেগের পাশাপাশি চীনে ক্লাস-এ সংক্রামক রোগ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। উহান ইউনিভার্সিটিতে কলেরা শনাক্তের আগে গত মার্চেও চীনে একজন কলেরায় আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া যায়।
২০২১ সালে দেশটিতে মোট পাঁচজন কলেরা রোগী পাওয়া যায়, তবে চিকিৎসায় সবাই সুস্থ হয়েছিলেন। কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কলেরা হলো অত্যন্ত মারাত্মক রোগ, এ রোগে আক্রান্ত হলে ভয়াবহ ডায়রিয়া হতে পারে। এটি দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে ছড়ায়। বেশির ভাগ সংক্রমিত রোগীর কোনো উপসর্গ থাকে না, তবে অনেকের ক্ষেত্রেই কলেরার ফলে গুরুতর ডিহাইড্রেশনসহ তীব্র ডায়রিয়া দেখা দেয়।
কলেরা একটি সহজে নিরাময়যোগ্য রোগ। তবে চিকিৎসা না হলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ২০২০ সালে ২৪টি দেশে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে ৮৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।