দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়ে পড়া নিশ্চিত হওয়ার পরদিন সাড়ে তিন মাসের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যুর তথ্য জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার সকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এক দিনে ভাইরাসটিতে মৃত্যু হয়েছে চারজনের। এর চেয় বেশি মৃত্যু হয় গত ১১ মার্চ। সেদিন ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়।
এ নিয়ে ভাইরাসটিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ২৯ হাজার ১৪৯ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৩ হাজার ৯০৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ১৮৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে টানা চার দিন শনাক্তের সংখ্যা দুই হাজারের ওপরে থাকল। এর আগের দিন শনাক্ত ছিল ২ হাজার ২৮১ জন। মঙ্গলবার এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৮৬ জন। সোমবার ২ হাজার ১০১ জনের সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার পাওয়া গেছে ১৫ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ নিয়ে টানা ১৫ দিন পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি পাওয়া গেল।
করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১৬ জুন প্রথমবারের মতো পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। টানা ১৪ দিন ৫ শতাংশের বেশি শনাক্তের হার পাওয়া যাওয়ার পর দেশে চতুর্থ ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি হলে পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। সেই হিসাবে দেশে এখন করোনা চতুর্থ ঢেউ চলে।
করোনার আগের তিনটি ঢেউয়ের মতো এবারও করোনার হটস্পট ঢাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্তের মধ্যে ১ হাজার ৭২৮ জনই এই জেলার।
এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৯ লাখ ৭৩ হাজার ৭৮৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের চারজনের তিনজন পুরুষ, অন্যজন নারী।
এদের মধ্যে দুজন চট্টগ্রামের বাসিন্দা। ঢাকা ও রাজশাহীতে আছেন একজন করে। এদের সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ২৯০ জন রোগী। আক্রান্ত হয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৭ হাজার ৬০৭ জন।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর।
গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ দেখা দেয়। প্রায় তিন মাস পর ১১ মার্চ নিয়ন্ত্রণে আসে। পরের তিন মাস করোনা স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি ছিল। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে সংক্রমণ।