করোনা প্রতিরোধী টিকার বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ নিতে কাউকে বাধ্য করা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ওষুধ শিল্প সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
করোনার টিকার বুস্টার ডোজ নিতে অনেকের মধ্যে অনীহা রয়েছে, তাদের টিকা নিতে বাধ্য করা হবে কি না- প্রশ্ন করা হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যের বিষয় কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়ার বিষয় নেই। এটা স্বাধীন দেশ, এ দেশের সব নাগরিকের স্বাধীন চিন্তা রয়েছে। আমাদের দায়িত্ব তাদের অবহিত করা।
‘টিকা নিলে কী সুবিধা আছে, কী অসুবিধা আছে, সে বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরি। বাকি সিদ্ধান্ত তার নিজের। এখানে চাপিয়ে দেয়ার কোনো বিষয় নেই। আমরা সেটা চাপিয়ে দিতে পারব না।’
করোনায় মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সবাইকে বুস্টার ডোজ নেয়ার আহ্বানও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা বুস্টার এখনও নেন নাই তারা বুস্টার নেবেন। বুস্টার নিলে আপনি সুরক্ষিত থাকবেন। মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে, যারা বুস্টার ডোজ নিয়েছেন। তাই আমরা আহ্বান জানাব যে যারা নেননি, অতি শিগগিরই নিয়ে নেবেন।
‘করোনা কিছুটা হলেও বাড়তি আমাদের দেশেও এবং আশপাশের দেশেও এটা বাড়ছে। এদিকে নজর রেখে আমি মনে করি এখনই সময় বুস্টার ডোজ নিয়ে নেয়ার।’
দেশে উৎপাদিত ওষুধের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক রাখতে শিল্প সমিতির নেতারা একমত হয়েছেন বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে বাজেট ঘোষণা হয়েছে তাতে অনেক কিছুর দাম বেড়েছে। যে জিনিসগুলোর দাম বেড়েছে তার মধ্যে অনেক ওষুধ শিল্পে ব্যবহার করা হয়। আমাদের যে ওষুধ আছে এতে এগুলোর দামে কিছুটা প্রভাব পড়বে। সে বিষয়েই আমরা মূলত আলোচনা করেছি।
‘২০২৬ সালে আমাদের যে পেটেন্ট সুবিধা আছে সেগুলো অনেকাংশে হয়তো তুলে নেয়া হবে, তখন কী হবে এবং ওষুধ শিল্পের বিকাশ কিভাবে করা যায় এবং উৎপাদন কিভাবে বাড়ানো যায়, রপ্তানি কিভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেগুলো নিয়েও কথা হয়েছে। ভ্যাকসিন কিভাবে তৈরি করা যায় সে বিষয়ে তাগাদা দিয়েছি। এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওষুধ শিল্প সমিতির যিনি সভাপতি আছেন নাজমুল ইসলাম সাহেব তারাও এতে অংশ নিয়েছেন। সব মিলিয়ে একমত হয়েছি যে আগামী দিনগুলোতে ওষুধের সাপ্লাই যাতে ঠিক থাকে, দামটাও যাতে ঠিক থাকে, সে বিষয়ে তারা নজর রাখবেন। পাশাপাশি শিল্পও যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়েও নজর রাখতে হবে।
‘আলোচনায় আমরা সবাই নীতিগতভাবে একমত হয়েছি যে ওষুধের প্রোডাকশন বজায় রাখব, যেভাবে করোনার সময় সব ওষুধের উৎপাদন বজায় ছিল, অনেক ধরনের কাজ তারা দেশবাসীর জন্য করেছেন, সেটা বজায় রাখবেন। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে ওষুধ প্রশাসন আমাদের পক্ষ থেকে ওনাদের সহযোগিতা করবে। যেকোনো সমস্যা যখনই হোক সমাধান করে নেবে। আমাদের যে ওষুধের মান এটা ওনারা বজায় রাখবেন- এর দামটাও সহনীয় রাখতে হবে। সবাই যাতে ওষুধ কিনতে পারে, তাদের নাগালে যেন থাকে- এটিই আমাদের মূল বিষয়।’
বাজেটের পর অনেক ওষুধের জন্যই বাড়তি দাম গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে, এটা আপনারা জানেন। কিন্তু ওষুধের দাম বেড়েছে বলে আমাদের জানা নেই। কোথাও যদি এমন হয় তাহলে সেটা অবশ্যই নজরদারি করা হবে। এখনও দাম বাড়েনি।
‘সামনে যেন দাম না বাড়ে, সেদিকে লক্ষ রেখেই এই আলোচনা। যেহেতু অনেক কিছুর দাম বেড়েছে যেটা ওষুধশিল্পে প্রভাব পড়বে। যেমন ডলারের দামও বেড়েছে। কাঁচামাল বিদেশ থেকে আসছে সেখানেও দাম বেড়েছে। সব নিয়েই আমরা আলোচনা করেছি।’