বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একে একে বন্ধ হচ্ছে অবৈধ ক্লিনিক, কারাদণ্ড-জরিমানা

  •    
  • ২৮ মে, ২০২২ ১৭:৪৬

মাগুরার সিভিল সার্জন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে সারা দেশের মতো অবৈধ প্রাইভেট হাসপাতালের তালিকা করে অভিযান চালানো হচ্ছে। মাঠে নেমে দেখি অনেক জায়গায় গোপনে হাসপাতাল, ক্লিনিকের হাট বসেছে। নিবন্ধন না থাকলেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

৭২ ঘণ্টা বা তিন দিনের মধ্যে দেশের সব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশের পর সারা দেশে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি করা হচ্ছে জরিমানা। দেয়া হচ্ছে কারাদণ্ডও।

চট্টগ্রাম

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করায় চট্টগ্রামের চারটি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ইলিয়াস চৌধুরীর নেতৃত্বে শনিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে এগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

ওই চার প্রতিষ্ঠান হলো চট্টেশ্বরী এলাকার কসমোপলিটন হাসপাতাল, ডিটি রোডের পপুলার মেডিক্যাল সেন্টার ও ক্লিনিক্যাল ল্যাব, পাঁচলাইশ এলাকার সিএসটিসি হাসপাতাল এবং ওয়াসা মোড়ের নিরুপণী ল্যাব ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

সিভিল সার্জন বলেন, ‘ছয়টি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারটি মৌখিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেনি।

‘বাকি দুটির সেবার মূল্য তালিকা নেই। এদের সতর্ক করে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’

টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল সদরে শনিবার সকাল ১০টা থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রানুয়ারা খাতুনের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়।

বৈধ কাগজপত্র না থাকায় দুপুর ১২টা পর্যন্ত তিনটি ক্লিনিক সিলগালা ও এর মালিকদের জরিমানা করা হয়েছে।

ওই তিন ক্লিনিক হলো স্বদেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, পদ্মা ক্লিনিক ও আমানত ক্লিনিক অ্যান্ড হসপিটাল। এ ছাড়া ডিজিল্যাব নামের আরেকটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান রোগী থাকায় রোববার দুপুর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে দ্য সিটি ক্লিনিককে ২০ হাজার টাকা, কমফোর্ট হাসপাতালকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ইউএনও রানুয়ারা বলেন, ‘কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তিনটি ক্লিনিককে সিলগালা ও মালিকদের জরিমানা করা হয়েছে। ডিজিল্যাবেরও বৈধ কাগজ নেই। তবে সেখানে সিজারিয়ান রোগী থাকায় রোববার দুপুরের পর সিলগালা করা হবে।’

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা সদরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আওলিয়ার রহমানের নেতৃত্বে চালানো অভিযানে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা ও দুইটি মৌখিকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সদর হাসপাতাল সড়ক এলাকায় শনিবার দুপুর ১টার দিকে এই অভিযান চালানো হয়।

আওলিয়ার বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গায় ২৫টি ক্লিনিক ও প্যাথলজি চিহ্নিত করে অভিযান চালানো হচ্ছে। তার মধ্যে আজকে সদর হাসপাতাল সড়কের বেশ কিছু ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিতে অভিযান চালানো হয়।

‘বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়েছে। এগুলো হলো সেন্ট্রাল মেডিক্যাল সেন্টার, আমাদের সনো এবং চুয়াডাঙ্গা আলট্রাসনোগ্রাফি সেন্টার। এ ছাড়া ইসলামী হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক বিভাগ ও তিশা ডায়াগনস্টিক সেন্টার মৌখিকভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

অভিযানের সময় সঙ্গে ছিলেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মাদ মহসীন।

নাটোর

নাটোরে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে সাতটি অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতাল সিলগালা করেছে।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালানো হয়।

সিলগালা করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো শহরের মাদ্রাসা মোড় এলাকার পদ্মা ক্লিনিক, সেন্ট্রাল ল্যাব ও প্রাইম ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চকরামপুরের হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চকবৈদ্যনাথের মদিনা চক্ষু হাসপাতাল, হাফরাস্তার তামান্না ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং বড়হরিশপুরের বরাত ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

মাহবুবুর রহমান জানান, জেলায় ১৭০টি ক্লিনিক, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ব্লাড ব্যাংক আছে। এগুলোর মধ্যে অনিবন্ধিত সাতটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে সিলগালা করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বন্ধ করে দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের দাবি, তারা নিবন্ধনের জন্য দেড় বছর আগে অনলাইনে আবেদন করে টাকা ও কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। এখনও নিবন্ধন নম্বর পাননি।

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সিভিল সার্জন আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সতর্ক করা হয়েছে একটি ক্লিনিককে।

খোকসা উপজেলায় দুপুর ২টার দিকে অভিযান চালিয়ে ১১টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে টাস্কফোর্সের সদস্যরা। নিবন্ধন নবায়ন না করায় সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় ১৫০টি বৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আছে। এর বাইরে অবৈধগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।

‘প্রত্যন্ত এলাকাতেও অবৈধ প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলোতেও অভিযান চালানো হবে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। সেই পরিমাণ জনবল স্বাস্থ্য বিভাগের নেই।’

রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে লাইসেন্স না থাকায় একটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।

বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আম্বিয়া সুলতানার নেতৃত্বে শনিবার দুপুর অভিযান চালানো হয়।

সিলগালা করা প্রতিষ্ঠান চারটি হলো বালিয়াকান্দি হাসপাতাল রোডের অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চন্দনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ডাক্তার চেম্বার, দি আরোগ্য ক্লিনিক ও জামালপুর প্যাথলজি সেন্টার। এর মধ্যে জামালপুর প্যাথলজির মঞ্জুরুল ইসলামকে ১৫ দিন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ইউএনও আম্বিয়া বলেন, ‘আমরা আজকে অবৈধ ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযান চালাই। এ সময় একটি ক্লিনিক ও তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাদের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এ কারণে এগুলো সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিককে।’

মাগুরা

মাগুরা শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১৫টি অনিবন্ধিত ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন মো. শহীদুল্লাহ দেওয়ানের নেতৃত্বে শনিবার দুপুরে শহরের ভায়না, সরকারি কলেজ রোড, ঢাকা রোড, নতুন বাজার, স্টেডিয়াম গেটসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।

জেলা শহরের বাইরে শালিখা উপজেলায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে অভিযান চলেছে।

সিভিল সার্জন বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে সারা দেশের মতো মাগুরাতেও অবৈধ প্রাইভেট হাসপাতালের তালিকা করে অভিযান চালানো হচ্ছে। আমাদের কাছে কয়েক বছর আগের ডেটা ছিল। সে অনুযায়ী মাগুরায় প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিকের সংখ্যা ১৪১টি।

‘এখন মাঠে নেমে দেখি অনেক জায়গায় গোপনে হাসপাতাল, ক্লিনিকের হাট বসেছে। নিবন্ধন না থাকলেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। শনিবার ১৫টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’এ ছাড়া শেরপুরে ৪২টি, বরিশালে ৭টি, হবিগঞ্জে ১২টি, ধামরাইয়ে ৪টি, যশোরে ৬টি, ফরিদপুরে ২০টি, বগুড়ায় ২টি ও ভোলায় ১টি অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন চট্টগ্রামের আব্দুল্লাহ রাকীব, টাঙ্গাইলের শামীম আল মামুন, চুয়াডাঙ্গার জহির রায়হান সোহাগ, নাটোরের নাজমুল হাসান, কুষ্টিয়ার জাহিদুজ্জামান, রাজবাড়ীর রবিউল আউয়াল ও মাগুরার ফয়সাল পারভেজ।

এ বিভাগের আরো খবর