বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। অর্থাৎ প্রতি পাঁচ জনে একজন এ রোগে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক রোবেদ আমিন।
বুধবার রাজধানীর ফার্স হোটেলে ‘মিট দ্যা প্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। এর কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।
এই রোগের প্রকোপ ও বিস্তার কমাতে সম্মিলিত কাজ করার আহবান জানান তিনি।
বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এনসিডিসি প্রোগ্রাম, প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সম্মিলিতভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন।’
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, ‘আমাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে। শুধু হাসপাতাল বানিয়ে উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগের প্রকোপ থেকে জাতিকে রক্ষা করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদরোগ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকির বিষয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি এবং স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের বিষয়ে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।’
গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, ‘অধিকাংশ সময় এই রোগের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষণ থাকে না। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হওয়ার পাশাপাশি স্ট্রোক হতে পারে।’
এ ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনির ক্ষতি হয়। নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর পরামর্শ দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ সাল থেকে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এনসিডি কর্নার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং ফলোআপ কার্যক্রম চলছে। সারাদেশে এই এনসিডি কর্নারের সংখ্যা ২০০তে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী ও কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মীর ইশরাকুজ্জামান এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।