বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাস্থ্যবিধির বালাইও নেই টিকার লাইনে

  •    
  • ২৩ আগস্ট, ২০২১ ২২:৫৫

শাহজাহান মোল্লা বলেন, ‘টিকা আর নেব কী? লাইনের সামনে মানুষ কমে না। পরিচিত হলে তারা পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে টিকা নেচ্ছে। এর ভাই, ওর মা, তার আত্মীয়। এসবের যন্ত্রণায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে এই রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়ায়ে থাকতে হচ্ছে।’

৬৯ বছরের হালমা বেগম চার ঘণ্টা ধরে বসে আছেন লাইনে। এতক্ষণে লাইন এগিয়েছে মাত্র কয়েক ফুট।

জেলা শহরের করোনা টিকাদান কেন্দ্র থেকে তার বাড়ি ১৩ কিলোমিটার দূরে মাগুরা সদর উপজেলার গোপালগ্রাম ইউনিয়নে। সেখান থেকে একাই এসেছেন তিনি। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও জানেন না কখন পাবেন টিকা।

একই অবস্থা ৭০ বছর বয়সী আশরাফ খন্দকারের। তিনিও দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছেন করোনাভাইরাসের টিকাগ্রহীতার লাইনে।

তার অভিযোগ, যাদের এখানে পরিচিত কেউ নেই তাদের দেরি হচ্ছে। পরিচিত থাকলে আগে টিকা নিয়ে চলে যাচ্ছে।

এটি মাগুরা সদর হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সোমবার সারা দিনের চিত্র। টিকার লাইন হাসপাতাল থেকে গিয়ে পৌঁছায় মাগুরা-ঝিনাইদহ মহাসড়ক পর্যন্ত।

করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার আশায় হাজার হাজার মানুষকে যেভাবে ডেকে আনা হয়েছে টিকা দিতে তাতে কর্তাব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সচেতনতা কতটা আছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

দিন শেষে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার টিকা নেয়ার জন্য ৫ হাজার নারী ও ৫ হাজার পুরুষকে এসএমএস দেয়া হয়। নারীদের টিকাকেন্দ্র টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং পুরুষদের নার্সিং ইনস্টিটিউট।

সারা দিনে দুই কেন্দ্র মিলিয়ে টিকা পেয়েছেন ৭ হাজার ৩৯০ জন। বাকিরা অনুপস্থিত ছিলেন।

মাগুরা সদর হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউটে পুরুষ টিকাগ্রহীতাদের দীর্ঘ লাইন

অনেকেই অভিযোগ করেন, টিকার লাইন তদারকির দায়িত্বে থাকা আনসার ও স্কাউট সদস্যরা স্বজনপ্রীতি করে লাইন না মেনে তাদের পরিচিতজনদের টিকা পাইয়ে দিচ্ছেন। তাই যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন তাদের লাইন এগোচ্ছে না।

টিকা নিতে আসা শাহজাহান মোল্লা বলেন, ‘টিকা আর নেব কী? লাইনের সামনে মানুষ কমে না। পরিচিত হলে তারা পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে টিকা নেচ্ছে। এর ভাই, ওর মা, তার আত্মীয়। এসবের যন্ত্রণায় আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে এই রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়ায়ে থাকতে হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার টিকে নিতে আলাম নিজেরে ভাইরাসমুক্ত রাখতে। এখানে দেখি সবাই গা ঘেঁষে দাঁড়ায় আছে। হাতাহাতিও হয়েছে। কী সুরক্ষা পাবো আমরা?’

টিকা নিতে আসা তরুণী রওশন আরা জানান, লাইনে কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই। অনেকেই মাস্ক পরেনি। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অনেকেরই শোনা যাচ্ছে জ্বর ও কাশি। করোনার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে এসে ঝুঁকি আরও বেড়ে গেল।

জেলা সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেওয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বজনপ্রীতির কোনো সুযোগ নেই। এরকম প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুই-একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হতে পারে। আমরা সুষ্ঠুভাবে বিষয়টি সামলানোর চেষ্টা করেছি।’

এখন পর্যন্ত এই জেলায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৮৬ জন করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ ও ৫১ হাজার ১১৮ জন দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন।

তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ হিসেবে ৭৭ হাজার ৫৩১ জন সিনোফার্মের ও ৪৮ হাজার ৪৫৫ জন অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে ৭ হাজার ৮৬৩ জন সিনোফার্মের ও ৪৩ হাজার ২৫৫ জন অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর