সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আরটি পিসিআর মেশিনটি দূষিত হওয়ায় সাময়িকভাবে করোনার নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গত মঙ্গলবার নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে এমনটি ধরা পড়ায় ল্যাবের সব কার্যক্রম বন্ধ করে তা দূষণমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নিউজবাংলাকে শনিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ শফিউল ইসলাম।
উপাধ্যক্ষ শফিউল ইসলাম বলেন, ‘গত মঙ্গলবার প্রায় ১০০টির মতো নমুনা পরীক্ষা করা হয় মেশিনে। ৮০টির বেশি নমুনার ফল পজিটিভ আসে। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ল্যাবটি দূষিত বলে প্রমাণিত হয়।’
এই কারণে এক হাজারের বেশি নমুনা জমা রয়েছে ল্যাবে। বন্ধ থাকায় নতুন নমুনা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ল্যাব কর্তৃপক্ষ নমুনা না নেয়ায় করোনা নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে বিপাকে পড়েছেন তিন জেলার রোগীরা।
জেলার বেলকুচি উপজেলা থেকে আসা মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত ১৬ আগষ্ট নমুনা দিয়েছি। ১৮ তারিখে আমার রেজাল্ট দেয়ার কথা। কিন্ত আজ ২১ তারিখ, এখনও রেজাল্ট পাচ্ছি না। এদিকে আমি পল্লীবিদ্যুতে চাকরি করি। করোনার রেজাল্ট ছাড়া আমাকে অফিসে যেতে দেবে না। আমি এখন কি করব বুঝে উঠতে পারছি না।’
এনায়েতপুর উপজেলা থেকে আসা মাসুদ রানা বলেন, ‘আমি আজ তিন দিন ধরে ঘুরছি নমুনা দেয়ার জন্য। কিন্ত ল্যাব বন্ধ থাকায় আমি নমুনা দিতে পারছি না। এতো দূর থেকে প্রতিদিন আসা অনেক কষ্টের। কবে ঠিক হবে তাও সঠিক করে বলে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’
হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ শফিউল ইসলাম বলেন, ‘কোরবানি ঈদের পর থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষার চাপ বাড়ছে। এ অবস্থায় ল্যাবে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ল্যাব দূষিত হওয়ায় করোনা পরীক্ষার ফলে অস্বাভাবিক রিডিং আসায় পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে দক্ষ লোক আনা হয়েছে। দ্রুত কাজ করার চেষ্টা চলছে। আশা করি আগামি তিন দিনের মধ্যে ল্যাব চালু করা যাবে।’
ওই হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত শর্মিলী পাল বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর ধরে তিনটি জেলার নমুনা ল্যাবের দুটি কেবিনেট এবং একটি মেশিন দিয়ে সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখানে নমুনা পরীক্ষার চাপ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এজন্য অতিরিক্ত আরও দুটি কেবিনেট এবং ১টি মেশিনের প্রয়োজন। তাহলে একটিতে ভাইরাস ছড়ালে অন্যটি দিয়ে পরীক্ষা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।’