হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিধারীদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে যাবে হোমিওপ্যাথিক বোর্ড।
শনিবার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোমিওপ্যাথিক বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ কুমার রায়।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে একতরফা রায় হয়েছে। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আপিল করব এবং আমরাই জয়ী হব।’
শনিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রায়ে বলা হয়েছে, হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রিধারীদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ শব্দ ব্যবহার বৈধ নয়।
রায়ে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির বাইরে হোমিও-ইউনানি প্রভৃতি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনাকে ‘বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উচ্চ আদালত দেশের এসব ‘বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি’ নিয়ে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় করারও পরামর্শ দিয়েছে।
এ বিষয়ে হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে গণমাধ্যমের খবরে রায়ের বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমি তাৎক্ষণিকভাবে আমার বোর্ডের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি, এই রায়ের কাগজপত্র খোজঁ করতে। এই বিষয়টি আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় লড়তে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক সমাজকে জানাতে চাই, আদালত যে রায়টা দিয়েছে সেটি বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন অনুযায়ী হয়নি। বিএমডিসির আইন অনুযায়ী যারা অ্যালোপ্যাথিক পড়াশোনা করেছে এবং এদের তালিকাভুক্ত তারাই চিকিৎসক। তেমনই হোমিওপ্যাথি বোর্ডের অধীনে সরকারের স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নিয়েছেন এবং বোর্ড থেকে নিবন্ধন নিয়েছেন তাদের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক বলা হয়।’
দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘যেহেতু আদালত একটি রায় দিয়েছে, আইনি পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার আমাদের রয়েছে। অবশ্যই আমরা এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব। এছাড়া প্রস্তাবিত যে আইনটা রয়েছে, সেটি আমরা আধুনিক করে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছি। এমনকি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে। এটা ক্যাবিনেটেও পাশ হয়ে গেছে। ওই আইন অনুযায়ী হোমিওপ্যাথিরা ডাক্তার লিখতে পারবেন বলে প্রস্তাবনা রয়েছে।’
শনিবার প্রকাশিত ৭১ পৃষ্ঠা দীর্ঘ রায়টিতে বলা হয়েছে, প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির বাইরে নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করা যাবে। তবে তাদের ইনটেগ্রেটেড ফিজিশিয়ান, কমপ্লিমেন্টারি ফিজিশিয়ান, ইন্টেগ্রেটেড মেডিসিন প্রাকটিশনার বা কমপ্লিমেন্টারি মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার পদবি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
২০১৯ সালে ন্যাশনাল মেডিক্যাল এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ নামে একটি সংগঠন থেকে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে। দীর্ঘ শুনানি শেষে রুলটি খারিজ করে আদালত এ রায় দেয়।