ইনজেকশন পুশ করার ভয়ে এখনও যারা টিকা নেননি তাদের জন্য দেশে আসছে নাকে নেয়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা। শুধু একবার নিঃশ্বাস নিলেই টিকা নেয়া হয়ে যাবে। সুরক্ষাও মিলবে শতভাগ।
সুইডেনের কেরোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাস প্রতিরোধী এমন একটি পাউডার টিকা নিয়ে কাজ করছেন। সব কিছু ঠিক থাকলে সেপ্টেম্বরে এই টিকা দেশের মানুষের ওপরে ট্রায়ালের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘সুইডিশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান টিকাটি বাংলাদেশে মানুষের ওপর ট্রায়ালে সম্মতি দিয়েছে।’
পাউডার টিকার কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশনের (সিআরও) এর প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ এবং অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।
এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘মানবদেহে তিন ধাপে পরীক্ষামূলকভাবে এই টিকা প্রয়োগ করা হবে। বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস লিমিটেডের সঙ্গে এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়েছে। প্রটোকলও প্রস্তুত করা হয়েছে। দেশে ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদনের জন্য চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে জমা দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএমআরসি অনুমোদন দিলে আগামী মাসে পরীক্ষামূলকভাবে টিকার প্রয়োগ শুরু হবে। ইতোমধ্যে হাসপাতালও নির্ধারণ করা হয়েছে। মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮০ জনের ওপরে এই পরীক্ষা চালানো হবে। টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদকে জানানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকাটি মানবদেহে প্রয়োগের বিষয়ে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। তবে এখনও আমরা লিখিত কাগজপত্র পাইনি। এগুলো হাতে আসলে এবং কাগজপত্র ঠিক থাকলে এ বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এ বিষয়ে ডা. আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রতিরোধী অন্যান্য টিকার মধ্যে এই টিকাও দুই ডোজ নিতে হবে। প্রথম ডোজ নেয়ার এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইঁদুরের ওপর পরিচালিত সুইডিশ এই টিকার ট্রায়াল শেষ হয়েছে। সেখানে ভালো ফল আসছে। দেশে এই টিকার ট্রায়াল ভালোভাবে হলে উৎপাদন খরচে টিকাটি কিনতে পারব। এমনকি সরকার চাইলে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনও সম্ভব।’
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ টিকা তৈরি ও বিতরণের জন্য আইএসআর ৬ জুলাই ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে। আইএসআরের বিজ্ঞানীদের মতে, শুকনো পাউডারের টিকাটি তৈরিতে কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রোটিন ব্যবহার করা হয় এবং এটি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।