বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা বণ্টনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে গড়া প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের আওতায় চীনের সিনোফার্ম থেকে আরও পৌনে ১৮ লাখ টিকা দেশে পৌঁছেছে।
বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে টিকা বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিশেষ কার্গো বিমানের ইকে ৯৮৬০ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
এর আগে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় বিমানটি বেইজিং বিমানবন্দর ত্যাগ করে। দুবাই হয়ে বিমানটি ঢাকায় পৌঁছায়।
ঢাকায় চীনা দূতাবাস বলছে, এই চালানে টিকা রয়েছে ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ডোজ। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে টিকা এসেছে ১৭ লাখ ৬০১ ডোজ।
সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশেও উৎপাদন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় চীন দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত হ্যালং ইয়ান। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘দ্রুতই আমরা বাংলাদেশে যৌথ উৎপাদন শুরু করতে যাচ্ছি।’
কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশকে টিকা দেয়ার বাইরেও উপহার হিসেবে শুরুতে ৫ লাখ ও কিছুদিন পর আরও ৬ লাখ ডোজ টিকা দেয় চীন।
এর বাইরে সম্প্রতি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের তাসখন্দ বৈঠক উপলক্ষে সিনোফার্মের আরও ১০ লাখ ডোজ টিকা উপহার দেয়া হয়।
দেশটি থেকে সিনোফার্মের ৭৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৭ কোটি ডোজ কিনছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, এর মধ্যে দেড় কোটি ডোজের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি টাকা পরিশোধের প্রক্রিয়া চলছে।
ছয় কোটি ডোজ টিকা কেনার বিষয়টি বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
চীন থেকে প্রথম দফায় গত ৩ জুলাই বাণিজ্যিকভাবে কেনা ২০ লাখ টিকা আসে। আর দ্বিতীয় দফায় ১৭ জুলাই আরও ২০ লাখ টিকা আসে। ৩০ জুলাই আসে ৩০ লাখ ডোজ।
বাংলাদেশ করোনা প্রতিরোধী টিকা প্রথম আনে ভারতের প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে। ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে সেখান থেকে ৩ কোটি ৪০ লাখ টিকা আসার কথা ছিল বাংলাদেশে। এর মধ্যে চুক্তির ৭০ লাখ ডোজ আসার পর ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে বাংলাদেশকে টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয় সিরাম।
প্রতিষ্ঠানটি থেকে চালান আসা বন্ধ হওয়ার পর চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ক্রয়চুক্তির মাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের আওতায় টিকা আনার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। অব্যাহত সেই তৎপরতায় নিয়মিত বিরতিতে টিকা আসছে দেশে।