বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কেন্দ্রে টিকা যত, প্রত্যাশী তার ৩ গুণ

  •    
  • ৯ আগস্ট, ২০২১ ১৫:২১

একটি কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা মোহাম্মদ আতিক বলেন, ‘দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে এখন শুনছি টিকা দেয়া শেষ হয়েছে। আমাদের ডেকে এনে হয়রানি করছে কেন? কাজকর্ম ফেলে রেখে আমরা আসছি। এভাবে তিন দিন ধরে টিকা নেয়ার জন্য ঘুরছি; টিকা পাচ্ছি না।’

ছয় দিনে দেশের ৩২ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ৭ আগস্ট দেশব্যাপী শুরু হয় গণটিকাদান ক্যাম্পেইন। এ কার্যক্রমের দুই দিনেই টিকা নিয়েছেন ৩৪ লাখের বেশি মানুষ।

তৃতীয় দিনেও টিকাপ্রত্যাশীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে কেন্দ্রগুলোতে, তবে টিকার পর্যাপ্ত ডোজ না থাকায় প্রথম দুই দিনের মতো ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাদের।

দেশের সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সোমবার ফজরের নামাজের পর থেকেই টিকাপ্রত্যাশীদের লাইন দেখা যায়। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। বেশ কিছু অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন স্থানে।

টিকা দেয়া সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলার কথা বেলা ৩টা পর্যন্ত। তবে দুপুর ১২টার পরই অধিকাংশ কেন্দ্রে টিকা শেষ হয়ে গেছে।

রাজধানীর চলমান টিকা কেন্দ্র ছাড়া উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ ওয়ার্ডে ৫৪টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫ ওয়ার্ডে ৭৫টি অস্থায়ী বুথ তৈরি করা হয়েছে।

বেলা ১১টার দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাতিরপুল টিকা কেন্দ্রে ৩৫০ জনের টিকা দেয়া শেষ। তখনও বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল ৫০০ জনের বেশি টিকাপ্রত্যাশী।

কেন্দ্রটিতে দিনে টিকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩৫০ ডোজ, তবে টিকা নিতে এসেছে এক হাজারের বেশি মানুষ। দুই ঘণ্টার মধ্যে টিকা দেয়া শেষ হয়েছে।

ভোর থেকে দাঁড়িয়েও পাননি টিকা

দাঁড়িয়ে থাকা টিকাপ্রত্যাশীরা বলছেন, টিকা না নিয়ে তারা লাইন ছাড়বেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়ন করা হয়। এ সময় হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

কেন্দ্রে টিকা নিতে আসা মোহাম্মদ আতিক বলেন, ‘দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে এখন শুনছি টিকা দেয়া শেষ হয়েছে। আমাদের ডেকে এনে হয়রানি করছে কেন?

‘কাজকর্ম ফেলে রেখে আমরা আসছি। এভাবে তিন দিন ধরে টিকা নেয়ার জন্য ঘুরছি; টিকা পাচ্ছি না। কেন আমাদের সাথে এমন প্রতারণা করা হচ্ছে?’

আরেক টিকাপ্রত্যাশী আব্দুর রহমান ফজরের নামাজ পরে টিকা নেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘৯টার সময় টিকা দেয়া শুরু হয়। অনেকজনকে ডেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে টিকা দেয়া হয়। তবে আমি লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে টিকা পাইনি। আজ এখানে ২১০ জন পুরুষকে টিকা দেয়ার কথা শুনেছি, তবে লাইনের অর্ধেক লোক টিকা নেয়ার পর এখন বলছে টিকা আর নেই।

‘এখন আর কী করমু। টিকা না দিলে যামুগা। আমি যখন লাইনে দাঁড়ালাম তখন আমার আগে এক শ লোক ছিল। আমার এনআইডি কার্ড সিরিয়াল নং দিয়ে গেছে।’

একই ধরনের অভিযোগ করেছেন লাবলু মিয়া।

তিনি বলেন, ‘এই কেন্দ্র থেকে আমাকে ১৫১ নং সিরিয়াল দেয়া হয়েছে; বলছে আজ আপনি অবশ্যই টিকা পাবেন। তবে এখন বলছে আর দেয়া হবে না। কেন্দ্রের লোকজন বলছে এখন টিকা নেই। এই কেন্দ্রে ৩৫০টি (ডোজ) দেয়া হবে। ২৪০ জন পুরুষ এবং ১১০ জন নারী। সিরিয়াল নম্বর দেয়ার পরও এখন বলছে আপনারা এখন আর টিকা পাবেন না।

‘আমার প্রশ্ন বাকি টিকাগুলো গেল কোথায়। আমরা টিকা পাব না কেন? বাজারের পাশে যে কেন্দ্র বানিয়েছে এটাতে কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই। মানা হচ্ছে না কোনো নিয়ম-কানুন। এখানে মানুষ এসে আরও অসুস্থ হচ্ছে। টিকা না পেয়ে আমরা করোনা নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।’

লাবলু বলেন, ‘এই টিকা কেন্দ্রটা একটি খোলা ময়দানে করা উচিত ছিল। এভাবে মানুষের কষ্ট দিয়ে লাভ কী? সরকারের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে টিকার সংকট নিরসনে সবাইকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা। এভাবে হয়রানি না করে টিকা দেয়া হোক; মানুষ যেন প্রতারণার শিকার না হয়।

‘টিকা কেন্দ্রে আইডি কার্ড সাধারণ মানুষকে পরিয়ে দিয়ে টিকা দেয়া হচ্ছে। এইভাবে পছন্দের মানুষকে টিকা দেয়া হচ্ছে। বাকিরা টিকা পাচ্ছে না। শুধু এই কেন্দ্র নয়; রাজধানীর প্রতিটা কেন্দ্রে এখন এমন পরিস্থিতি।’

জনপ্রতিনিধি-স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাষ্য

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আ স ম ফেরদৌস আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখনও প্রতিদিন ৩৫০ ডোজ দেয়া হচ্ছে, তবে এখানে এক হাজারের অধিক সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে বলেন বাকি লোকদের টিকা কীভাবে দিব? টিকা সংকটের কারণেই এই ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।’

এমন সংকট সমাধানে চেষ্টার কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। ভোটের আনন্দের মতো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকা নিচ্ছে। রোববারের মধ্যে দেশে আসছে আরও ৫৪ লাখ টিকা। এই টিকা দেশে আসলে টিকাকেন্দ্রে গতি বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘টিকার ঘাটতি মেটাতে চীন থেকে ৩ কোটি বাড়িয়ে ৬ কোটি টিকা কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। এসব টিকা পেলে টিকা কার্যক্রমের গতি ধরে রাখা সম্ভব।’

এ বিভাগের আরো খবর