বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার টিকা পাবেন অন্তঃসত্ত্বা-স্তন্যদায়ীরাও

  •    
  • ৮ আগস্ট, ২০২১ ২২:৫৯

অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা নেয়ার লাভ-ক্ষতি সংক্রান্ত তথ্য অপ্রতুল। অন্য যেকোনো টিকার মতো এ টিকার ক্ষেত্রেও টিকা পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই। বিষয়টি টিকা নেয়ার আগে অন্তঃসত্ত্বাকে জানাতে হবে। সম্মতিপত্রে সই করার পর তাকে টিকা দিতে হবে।

বেশ কিছু ঝুঁকির বিষয় উল্লেখ করে অন্তঃসত্ত্বাদেরও করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। টিকা দেয়া হবে স্তন্যদায়ী মায়েদেরও।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝুঁকির বিষয়টি গর্ভবতীকে জানিয়ে সম্মতিপত্রে তার সই নিয়েই টিকা দিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রোববার রাতে এমন সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও অন্তঃসত্ত্বা, স্তন্যদানকারী নারীদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার টিকাবিষয়ক জাতীয় কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী তাদেরও টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এক চিঠিতে টিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গঠিত ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হক।

তার নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সম্মতিপত্রে টিকাগ্রহীতা/আইনানুগ অভিভাবক ও কাউন্সেলিং চিকিৎসকের স্বাক্ষর ছাড়া এ টিকা দেয়া যাবে না।

এতে আরও বলা হয়, টিকা নিতে ইচ্ছুক অন্তঃসত্ত্বাকে টিকা দেয়ার আগে বেশ কিছু তথ্য একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তাকে জানাবেন।

কী আছে নির্দেশনায়

ক. এ টিকায় নবজাতকের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে।

খ. বয়স্ক অন্তঃসত্ত্বা (৩৫ বছর), উচ্চ বিএমআই সম্পন্ন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত নারী গর্ভধারণের সময় (বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টার) করোনায় আক্রান্ত হলে তা মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

গ. সাধারণ নারীদের তুলনায় অন্তঃসত্ত্বারা করোনায় আক্রান্ত হলে স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা অনেক বেশি।

তবে অন্তঃসত্ত্বা টিকা নিলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ও এর ফলে সৃষ্ট জটিলতার ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম হয় বলেও জানানো হয় নির্দেশনায়।

ক্ষতিকর প্রভাব কী

গর্ভধারণের সময় টিকা নেয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে নির্দেশনায় বলা হয়, অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা নেয়ার লাভ-ক্ষতি সংক্রান্ত তথ্য অপ্রতুল। অন্য যেকোনো টিকার মতো এ টিকার ক্ষেত্রেও টিকা পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।

বিষয়টি টিকা নেয়ার আগে অন্তঃসত্ত্বাকে জানাতে হবে। তিনি সম্মতিপত্রে সই করার পর তাকে টিকা দিতে হবে।

গণটিকাদান কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে টিকা নিয়েছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭২ জন। ছবি: নিউজবাংলা

তবে স্তন্যদানকারী নারীদের টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অন্যদের যেভাবে টিকা দেয়া হয় তাদেরও সেভাবেই দিতে হবে।

কখন টিকায় মানা

চিঠিতে বলা হয়, টিকা নেয়ার দিন অন্তঃসত্ত্বা অসুস্থ থাকলে তাকে ডোজ দেয়া যাবে না। অনিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হলেও তিনি টিকা পাবেন না।

কোনও অন্তঃসত্ত্বার টিকা অ্যালার্জির ইতিহাস থাকলে বা প্রথম ডোজ নেয়ার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার উপসর্গ বা এইএফআই কেস হিসাবে শনাক্ত হলে তাকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে না।

উচ্চ আদালতে আবেদন

বাংলাদেশে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে গণটিকাদান শুরু হলেও প্রথম থেকেই সন্তানসম্ভবা ও স্তন্যদায়ীদের দূরে রাখা হয়েছিল।

সম্প্রতি সন্তান প্রসবের পর বেশ কয়েকজন মায়ের করোনায় মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন হচ্ছে। এর মধ্যে ৩১ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। এর মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা একজন নারী আইনজীবীও রয়েছেন। তারা অন্তঃসত্ত্বাদের টিকার আওতায় আনতে দ্রুত আদেশ চান।

এর আগে গত ২৯ জুলাই এ বিষয়ে সরকারকে একটি আইনি নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় এ রিট করা হয়।

আবেদনে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারের নির্ধারিত করোনার টিকা রেজিস্ট্রেশনের সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকাদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

পরে গত ২ আগস্ট এক আদেশে অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা দেয়ার বিষয়ে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যাতে কোনো সিদ্ধান্ত আসে, সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

একই দিন দেশের টিকাবিষয়ক সর্বোচ্চ পরামর্শক কমিটি বা ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন অ্যাডভাইজারি গ্রুপ (নাইটেগ) টিকা দেয়ার সুপারিশ করে।

এ কমিটির সদস্য ও সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘আমরা আমাদের দিক থেকে পর্যালোচনা করে দেখেছি, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের টিকা দিলে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের মধ্যে টিকা দেয়া শুরু হয়ে গেছে। আমরাও সেই সুপারিশ করেছি।’

একই দিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বরাত দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম জানান, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের টিকা দিতে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর