ছয় দিনে ৩২ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে শনিবার থেকে দেশের সব ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী গণটিকাদান কার্যক্রম চলছে। প্রথম দিনে কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়ের সঙ্গে ছিল ভোগান্তি। সেই ভোগান্তি দ্বিতীয় দিনে দ্বিগুণ বেড়েছে। মূলত টিকা স্বল্পতা কারণেই এই ভোগান্তি।
রোববার সকাল ৭টা থেকে কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। টিকার সংখ্যা সীমিত হওয়ায় অনেকেই টিকা কার্ড পাচ্ছেন না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককে।
চলমান টিকাকেন্দ্রগুলোতে ভিড় বেড়েছে। অনেক কেন্দ্রে টিকা না পেয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই টিকা না পেয়ে ক্ষোভ ও হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
রোরবার সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৫ নং ওয়ার্ডের প্রভাতি বিদ্যানিকেতন কেন্দ্র ঘুরে দেখে নিউজবাংলা। এই কেন্দ্রে দিনে টিকার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৩৫০ ডোজ। তবে কেন্দ্র টিকা নিতে এসেছে এক হাজারের বেশি মানুষ। এক ঘণ্টা টিকা দেয়ার পরই এই কেন্দ্রের টিকা শেষ হয়ে যায়।
টিকা নিতে আসা জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ফজরের নামাজ পড়ে চলে এসেছি। এখন বলে টিকা শেষ। কী করবো এখন?’
টিকা নিতে আসা নির্মল দাস বলেন, ‘সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি ৫৫ নং সিরিয়াল নিয়ে। ৯টার সময় টিকাদান শুরু হয়। এক ঘণ্টা পর বলল, টিকা দেয়া শেষ। এখন গেইট বন্ধ করে দিয়েছে ভিতর থেকে বলে, টিকা শেষ। স্থানীয় কাউন্সিলরের লোকজনকে টিকা দিয়েছে।’
দুই দিন এসে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পাননি শারমিন বেগম। তিনি বলেন, ‘এখানের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের লোকজন। ৫০ জন শেষ না হতেই বলে টিকা শেষ।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিতরে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা বলেন, তাদের কাছে যাদের পাঠানো হয়েছে, তাদেরকে তারা টিকা দিয়েছেন। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টিকা দেওয়া প্রায় শেষ।’
৮৫ বছরের শামসুন্নাহার বেগম বলেন, ‘আমি প্রথমে টিকা দিতে চাইনি। পরে ছেলেরা আমাকে নিয়ে এসেছে। এটাই ভালো লাগছে যে, আমরা দিতে পেরেছি।’
জুয়েল হাসান বলেন, ‘সকাল আটটা থেকে লাইনে ছিলাম। সাড়ে এগারোটায় টিকা দিতে পেরেছিলাম। বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এটাই ভালো লেগেছে যে, টিকা দিতে পেরেছি।’
বুলবুল হোসেন এসেছেন সকাল সাড়ে ছয়টায়। তিনি বলেন, ‘তখন থেকে দাঁড়িয়ে আছি। আমার সিরিয়াল দিয়েছে ৪৫ তবে ভিতরে ২০০ জনের উপরে টিকা দেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সিরিয়ালে রেখে অন্যদের অন্য গেইট দিয়ে ঢুকিয়ে তাদের টিকা দেওয়া হয়েছে।’
দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখানে আনসাররা দায়িত্বে ছিল। তারা সাসলাতে পারেনি। কাউন্সিলরের লোকজন অন্যদের ঢুকিয়ে টিকা দিয়েছে।’