চলতি বছর ডেঙ্গু সন্দেহে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। তবে ১০ জনের মৃত্যুর বিষয়টি এখনই কিছুই জানাতে পারেনি সরকারি এই সংস্থাটি। তথ্য যাচাই-বাচাই কাজ চলছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে রোববার অনলাইনে স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম এমন তথ্য জানিয়েছে।
নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু সন্দেহে যাদের মৃত্যু হচ্ছে, তাদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে কাগজপত্র আইইডিসিআরে দেয়া হয়। তারা কাগজপত্র দেখে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারপর নিশ্চিত করে। এ কারণে একটু সময়ে লাগে।
‘আমরা নিশ্চিত করে বলতে চাই, ডেঙ্গুর কারণেই মৃত্যু হয়েছে। কারণ ডেঙ্গুতে যারা মারা গেছেন, তাদের অন্য অনেক রোগও থাকতে পারে। তাই আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখি, আসলেই কোন রোগে তার মৃত্যু হয়েছে। এই কারণে একটু সময় লাগে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু করণীয় রয়েছে। বাসাবাড়িতে রাখা ফুলের টব বা অন্যান্য স্থানে জমে থাকা পানি তিন দিনের মধ্যে ফেলে দিতে হবে। বাসা ছেড়ে তিন দিনের বেশি সময়ের জন্য বাইরে গেলে কমোডের প্যান ঢেকে রাখতে হবে, পানির যে কোনো পাত্র পানিশূন্য করে উল্টে রাখতে হবে। দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা উত্তম। মশার কামড় থেকে বাঁচতে হলে ছোট-বড় সবার শরীর ঢেকে রাখা যায় এমন কাপড় পরিধান করা উচিত।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় দেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে ২০৪ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত এক দিনে ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হয়েছে ২০৪ জন। অন্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয় ১০ জন। চলতি বছর এ নিয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৪ হাজার ৩১৯ জনের শরীরে। তাদের মধ্যে জুলাইতে শনাক্ত হয় ২ হাজার ২৮৬ জন। আগস্টের প্রথম সাত দিনে শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৬৬১ জন।
এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৩ হাজার ৩১২ জন। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৯৯৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৯৫৮ ডেঙ্গু রোগী। আইইডিসিআর জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর এই বিস্তার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সরকার। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র এডিস মশা নির্মূলে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। নগরীর বিভিন্ন ভবনে অভিযান চালিয়ে এডিস বিস্তারের পরিবেশ থাকায় জরিমানা করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে প্রচারও চলছে।