দেশের সব ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে শনিবার। আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত চলবে এ কর্মকাণ্ড।
ছয় দিনে পর্যায়ক্রমে ৩২ লাখ মানুষকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হবে।
সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া টিকাদান চলবে বেলা ৩টা পর্যন্ত। রাজধানীর চলমান টিকা কেন্দ্র ছাড়া উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ ওয়ার্ডে ৫৪টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫ ওয়ার্ডে ৭৫টি অস্থায়ী বুথ তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে সকাল ৮টা থেকে লম্বা লাইন দেখা গেছে।
গ্রহীতাদের এনআইডি কার্ড দেখে নাম ধরে ডেকে ডেকে টিকা দেয়া হচ্ছে।
টিকা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ছয় দিনের ক্যাম্পেইনে সারা দেশে চার হাজার ৬০০টি ইউনিয়ন, এক হাজার ৫৪টি পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশন এলাকার ৪৩৩টি ওয়ার্ডে ৩২ হাজার ৭০৬ জন টিকাদানকারী এবং ৪৮ হাজার ৪৫৯ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে।
টিকাগ্রহীতার ভাষ্য
ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগর ইউনিয়নের আমবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে টিকা নিয়েছেন ডাববিক্রেতা মো. সাইফুল।
তিনি জানান, ১০ দিনে আগে নিবন্ধন করেছিলেন টিকা নিতে, তবে মেসেজ আসেনি। তাই এনআইডি কার্ড দিয়ে টিকা নিয়েছেন।সাইফুল আরও জানান, ছোটবেলায় যেভাবে টিকা হয়, সেইভাবে এ টিকা দেয়া হয়েছে। তাই খুব ভালো লাগছে।
কী বলছেন কর্মকর্তারা
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক শনিবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কালই (শুক্রবার) কেন্দ্রে কেন্দ্রে টিকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আজ সকাল থেকে টিকাদান শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনাগুলো সংশ্লিষ্টদের পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ দেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন এলাকায় ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন শুরু হবে। আগামী ৮ ও ৯ আগস্ট ইউনিয়ন ও পৌরসভার বাদ পড়া ওয়ার্ডে এবং ৭ থেকে ৯ আগস্ট সিটি করপোরেশন এলাকায় টিকাদান কর্মসূচি চলবে।
‘দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৮ ও ৯ আগস্ট ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চালু থাকবে। এ ছাড়া ১০ থেকে ১২ আগস্ট জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের জনগোষ্ঠীর ৫৫ বছর বয়সীদের মধ্যে কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। গ্রাম, শহর ও দুর্গম এলাকার মানুষ, মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদেরও টিকা দেওয়া হবে।’
ঢাকার সিভিল সার্জন আবু হোসেন মো. মাঈনুল আহসান সকালে কেরানীগঞ্জের আগানগর ইউনিয়নে আমবাগিচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রে ৬০০ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। যাদের টিকা দেয়া হচ্ছে তাদের আগে থেকে নিবন্ধন করা হয়েছে।’
টিকা নেয়ার বয়সসীমা ১৮ থেকে কেন আবার ২৫ বছর করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৮ বছর বয়সী অনেকের এনআইডি নেই। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, যদি এনআইডি ছাড়া ১৮ বছর বয়সীদের টিকার আওতায় আনতে যাই, মাঠে যে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, সেটাকে আমরা সামাল দিতে পারব না।
‘সে জন্য অনেক আলোচনা করে আমরা ঠিক করেছি টিকাদানের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ২৫ বছর হবে।’
সিভিল সার্জন বলেন, প্রথম ডোজ ক্যাম্পেইন করা দেয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় ডোজও ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।