করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। আগস্টের প্রথম চার দিনেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
চলতি মাসের চার দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন ছাড়িয়েছে দুই শর ঘর। গত এক দিনে হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ২৩৭ জন।
আক্রান্তের সংখ্যা মঙ্গলবার ছিল ২৬৪ জন, সোমবার ২৮৭ জন ও আগস্টের প্রথম দিন রোববার ছিল ২৩১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বুধবার বিকেলে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে ঢাকা বিভাগের হাসপাতালগুলোতেই ভর্তি হন ২২১ জন। অন্য বিভাগের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হন ১৬ জন।
চলতি বছর এ নিয়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৬৮৩ জনের দেহে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৮৬ জন ছিলেন জুলাই মাসে।
এসব রোগীর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ২ হাজার ৬১৭ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৪ জন ডেঙ্গু রোগী।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ বছর জুন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৭২ জন, তবে জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জনে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছেন, আগস্টে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর এই বিস্তার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সরকার। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র এডিস মশা নির্মূলে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। নগরীর বিভিন্ন ভবনে অভিযান চালিয়ে এডিস বিস্তারের পরিবেশ থাকায় জরিমানা করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে চলছে প্রচার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ডেঙ্গুর ভাইরাস ছড়ায় মশার মাধ্যমে। আর অন্য মশার সঙ্গে ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী এডিস মশার পার্থক্য আছে। মূলত এই মশার জন্ম হয় আবদ্ধ পরিবেশে। ফলে নাগরিকরা সচেতন না হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন।
২০১৯ সালে ডেঙ্গু রোগে ব্যাপক প্রাণহানি ও লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পর গত বছর সতর্ক অবস্থানে ছিল ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। তারপরও ২০২০ সালে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৪০৫ জন, যাদের মধ্যে ৬ জন মারা যান।
২০১৯ সালে ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারে আক্রান্ত হয় ১ লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। গত বছর সংক্রমণের মাত্রা অনেকটা কম থাকলেও এ বছর পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে।