পাবনা জেনারেল হাসপাতালে অচল পড়ে আছে চার শয্যার আইসিইউ ইউনিট। কাজে আসছে না ভেন্টিলেটর, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাসহ মুমূর্ষু করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় উপকরণও।
প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রাংশ থাকার পরও চালু করা যায়নি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা। এতে সংকটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না জেলার প্রধান এ হাসপাতালে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে হাসপাতালটিতে আইসিইউ ইউনিট চালুর জন্য চারটি শয্যা ও চারটি কার্ডিয়াক মনিটর আনা হয়। চলতি বছরের ফেব্রয়ারিতে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য দরপত্র হয়। জুনের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল এখনও প্ল্যান্টের নির্মাণ কাজই শুরু করতে পারেনি।
ওয়ার্ডগুলোতে পাইপলাইন এবং তরল অক্সিজেন ট্যাংকারের কাজ শুধু শেষ হয়েছে। এখন তরল অক্সিজেন পাওয়া গেলেই কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল হোসেন জানান, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহের জন্য লিকুইড অক্সিজেন কাঠামো নির্মাণ ১৫ দিন আগে শেষ হয়েছে। তবে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় এটি চালু করা যাচ্ছে না।
হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে বড় সিলিন্ডার সংযোগ দিয়ে মেডিফোল্ড পদ্ধতিতে হাই-ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানান তিনি।
তরল অক্সিজেনের মাধ্যমে কবে নাগাদ পাবনা জেনারেল হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
স্পেকট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাবনা হাসপাতালে লিকুইড ট্যাংকার ও পাইপ লাইন সংযোগের কাজ শেষ। তবে যেসব হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংকারে সরবরাহ চালু আছে তাদেরই আমরা পর্যাপ্ত তরল অক্সিজেন দিতে পারছি না। পাবনায় কবে চালু করা যাবে নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট সালেহ মোহাম্মদ আলী জানান, করোনা রোগীদের সেবা দিতে হাসপাতালে ১৫০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আইসিইউ পরিচালনায় সহায়তা দিতে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে চুক্তির পরও কেবল কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু না থাকায় সংকটাপন্ন রোগীদের আইসিইউ, এইচডিইউ সুবিধা দেয়া যাচ্ছে না।
পাবনার সিভিল সার্জন মনিসর চৌধুরী বলেন, তরল অক্সিজেন বরাদ্দ পেলে জেলায় করোনা রোগীদের সর্বোচ্চ আধুনিক চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হবে। তরল অক্সিজেন বরাদ্দ চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই তরল অক্সিজেন পাওয়া যাবে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, পাবনায় করোনা রোগীর সংখ্যা রোববার ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৪১৫ জন শনাক্ত হয়েছেন জুলাইয়ে।