রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চালু হয়েছে প্যাথলজি টেস্টের সুবিধা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে, ভর্তি থাকা করোনা রোগীদের কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আর বাইরে যেতে হবে না। কম খরচে সব পরীক্ষা হবে হাসপাতালের ভেতরেই।
রোববার থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা রোগীদের সব পরীক্ষা-নীরিক্ষা শুরুও হয়েছে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের দীর্ঘদিনের দাবির মুখে এই ব্যবস্থা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই দাবি জানিয়ে হাসপাতাল পরিচালককে স্মারকলিপিও দেন সামাজিক সংগঠন ‘৮০ দশকের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’।
হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, রোগীদের সব পরীক্ষা-নীরিক্ষা হাসপাতালের ভেতরেই করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য একটি প্যাথলজির অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্যাথলজি ল্যাবটি সেপ্টেম্বর নাগাদ শুরু হতে পারে। এটি চালু হলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার চিত্রই বদলে যাবে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এখন থেকে ভর্তি থাকা কোভিড রোগীদের পরীক্ষা জন্য আর বাইরে যেতে হবে না। ডি-ডাইমার, ডি-হাইড্রোজেনেস, সিআরপি, সিরাম ফেরিটিন টেস্ট হবে হাসপাতালের ভেতরেই।
‘এগুলো বাইরে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করাতে অনেক টাকা নেয়। সে জন্য ভর্তি থাকা রোগীদের জন্য হাসপাতালেই এই টেস্ট শুরু হলো।’
রাজশাহীর বাঘা থেকে রামেক হাসপাতালে সোমবার চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন মো. সুজন। দুই মাস আগে তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। সে সময় তার সব পরীক্ষা করা হয়েছিল একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। ফলোআপ করাতে আসলে আরও কিছু পরীক্ষা দেয়া হয় তাকে। সেগুলো তিনি রামেকের প্যাথলজি সেন্টারেই করেছেন। এ সুবিধা পেয়ে বেশ খুশি সুজন।
প্যাথলজি বিভাগের জনবল বিষয়ে শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘আমাদের আপাতত টেকনিশিয়ান আছেন ১১ জন। এর মধ্যে ব্লাড ব্যাংকে কাজ করেন পাঁচজন। অন্য ছয়জন কাজ করেন প্যাথলজিতে। আমরা পরিকল্পনা করেছি যে, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছু লোক নেব।
‘এ জন্য হালকা কিছু সার্ভিস চার্জ নেয়া হবে। এটা যদি করতে পারলে রোগীদের দুর্ভোগ কমবে। বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্মও কমবে।’
তিনি জানান, সরকারের নির্ধারিত ৬০০ টাকায় ডি-ডাইমার, সিরাম ফেরিটিন ২৫০ টাকা ও ১৫০ টাকায় ডি-হাইড্রোজেনেস, সিআরপি পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) রোগীদের আরও তিনটি পরীক্ষা একসঙ্গে করা হবে ৬০০ টাকায়।
ইসিজির ব্যবস্থা আগে থেকেই ছিল। এখন ট্রপোনিন আইও টেস্ট করা হবে ৫০০ টাকায়।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, ‘মোট চারটি ক্যাটাগরিতে টেস্ট করা হবে। এগুলো হল ইনডোর, আউটডোর, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস ও কার্ডিয়াক প্যাথলজি। নতুন আউটডোর প্যাথলজি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষে।
‘কার্ডিয়াক ওয়ার্ডের রোগীদেরও মুভমেন্ট করতে হবে না। সেখানেই সব টেস্ট হবে… হাসপাতালের ভেতরেই আমরা অনেকগুলো কালেকশন (নমুনা) পয়েন্ট বানাব।’