বাংলাদেশে অল্প ওজনের অনেক শিশু জন্ম নেয়ায় শিশুমৃত্যুর হার বাড়ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের উদ্বোধনকালে সোমবার বেলা ১টার দিকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে যুক্ত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সচিব আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলমসহ স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে অল্প ওজনের অনেক শিশু জন্মগ্রহণ করে, যার কারণে নবজাতক মৃত্যুর হার বাড়ছে। যদিও আমরা শিশু মৃত্যুর হার ও মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে এসডিজি অর্জন করেছি।
‘এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার অর্জন করেছেন। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের এই সংশ্লিষ্ট সব মানুষের উদ্যোগের কারণে।’
তিনি বলেন, ‘একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নাই। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করালে মৃত্যুহার শতকরা ৩১ শতাংশ কমে যায়। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ পান করালে শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি আরও ১২ শতাংশ কমে যায়।
‘তাই শিশুর মৃত্যু রোধ এবং তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ পান করান। শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ পান করান। এ ছাড়া জন্মের দুই বছর পর্যন্ত ঘরে তৈরি খাবারের পাশাপাশি মায়ের দুধ পান করান।’
বিশ্বব্যাপী শিশুদের বুকের দুধ পান করানোর হার খুবই কম। জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ৪৩ শতাংশ শিশুকে দুধ পান করানো সম্ভব হয়। জন্মের ৬ মাস পর পর্যন্ত ৪১ শতাংশ শিশুকে শুধু মায়ের বুকের দুধ পান করানো সম্ভব হয়।
তবে বাংলাদেশ এই হার অনেক ভালো। দেশে ৬৯ শতাংশ শিশু জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ পান করে। আর ৬৫ শতাংশ শিশুকে জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত দুধ পান করানো হয়।
বিশ্বব্যাপী জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ পান করানোর হার ৫০ শতাংশ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার সময়সীমা ধরা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে অল্প ওজনের শিশু বেশি। বাংলাদেশে সার্বিকভাবে শিশুমৃত্যুর হার কমলেও নবজাতকের মৃত্যুর হার তেমন কমছে না৷ এই প্রবণতা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে।’