করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুধু জুলাই মাসে ৩২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় ১৫১ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ১৭২ জন মারা গেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সাতজন।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান। তিনি জানান, মৃতদের বাড়ি ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদ ও মাগুরা জেলায়। তারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন।
হাসপাতালটিতে রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে পরিচালক জানান, জেলার বাইরে থেকে করোনা বা উপসর্গ নিয়ে যেসব রোগী আসে, তাদের শরীরিক অবস্থা ভালো থাকে না। এ ছাড়া গ্রামের মানুষদের মধ্যে সচেতনতা অনেক কম। এ কারণে মৃত্যুর হার বেশি। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অনেকেই বেঁচে যেতেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার এই দুর্যোগে রোগীকে সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’
বর্তমানে ৫১৬ শয্যার এই মেডিক্যাল কলেজে শুধু করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করোনা ডেডিকেটেড এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩১০ জন। তাদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ২২৮ জন। অন্যরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ফরিদপুর জেলা সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫০ জনের। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৭১৪ জন আর সুস্থ হয়েছেন ১৩ হাজার ৭১৭ জন।
জেলার এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, কোনো ব্যক্তির শরীরে সামান্য জ্বর, ঠাণ্ডা বা অন্য কোনো সমস্যা হলেই দ্রুত চিকিৎসকরে পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে চলতে হবে। তাহলেই করোনায় প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে।
ফরিদপুর জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৯০ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলাতেই মারা গেছেন ২৮৪ জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজার ৯৯৩ জন।
ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা বলেন, সরকারি নির্দেশনামতে করোনার শনাক্তের হার কমিয়ে আনতে ইউনিয়ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরোহিতসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক কাজ চলছে।