করোনা থেকে সুরক্ষায় চলমান টিকা কার্যক্রমে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
শনিবার অন্তঃসত্ত্বা অ্যাডভোকেট রাশিদা চৌধুরীসহ সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী এ রিট করেন। বাকী তিন আইনজীবী হলেন—ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার এবং ব্যারিস্টার মো. মোজাম্মেল হক।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশের কোনো জবাব না পাওয়ায় এ রিট করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন রিটকারিদের একজন আইনজীবী হুমায়ন কবির পল্লব।
তিনি জানান, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে ই-মেইল করে আবেদনটি করা হয়। আগামীকাল এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে।
রিটে স্বাস্থ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং আইইডিসিআরের পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটকারিদের মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী দীর্ঘদিন যাবৎ করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনভাবেই করোনা ভ্যাকসিন নিতে পারছেন না। তিনি তার অনাগত সন্তান এবং নিজেকে নিয়ে শঙ্কিত।
অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, অন্তঃসত্ত্বারা করোনারোধী টিকা নিতে পারবেন। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ফাইজার ও মর্ডানার উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ওইসব দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীরা করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসছে।
এ কারণে আমাদের দেশের অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও টিকার আওতায় আনতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩৫ লাখ নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়। অর্থাৎ ৩৫ লাখ অন্তঃসত্ত্বা নারী আরও ৩৫ লাখ মানুষের অস্তিত্ব বহন করেন।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারের নির্ধারিত করোনার টিকা রেজিস্ট্রেশনের সুরক্ষা অ্যাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। অথচ তাদের চেয়েও কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্তঃসত্ত্বাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার টিকা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এই অধিকার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বীকৃত একটি মৌলিক অধিকার। তাদেরকে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা একটি নিপীড়নমূলক, বৈষম্যমূলক এবং তাদের জীবনধারণের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
করোনায় অন্তঃসত্ত্বা আইনজীবী ও বিচারকের মৃত্যু
গর্ভের সাত মাসের সন্তানকে নিয়েই মাত্র ৩৪ বছর বয়সে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কানিজ রেহনুমা রব্বানী ভাষা। গত ১৪ জুলাই তিনি মারা যান। এছাড়াও ঝালকাঠির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সানিয়া আক্তার গত ২৮ জুলাই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান।