রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে রোগীর চাপ কিছুটা কমেছে। ঈদের ছুটি থেকেই এই চাপ কমতে শুরু করে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের পর করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় বাড়তি ১০০ বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত তেমন খারাপ হয়নি। দিন দিন পরিস্থিতির উন্নতিরও আশা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তথ্যমতে, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে জুন মাস থেকেই শুরু হয় শয্যাসংকট। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় জুলাই মাসে সংকট আরো প্রকট হয়। দু-এক দিন পরপরই নতুন নতুন ওয়ার্ডকে করোনা ওয়ার্ড করতে হয়।জুলাই মাসজুড়েই করোনা ইউনিটের বেডের থেকে রোগীর সংখ্যা বেশি ছিল। সব সময়ই প্রায় অর্ধশত রোগীকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। জুলাই মাসের ১২ তারিখ এখানকার ৪৫৪ শয্যার বিতরীতে রোগী ভর্তি ছিল ৫১৭ জন। অর্থাৎ বেডের চেয়ে রোগী বেশি ভর্তি ছিল ৬৩ জন। এ অবস্থায় ঈদের সময় বাড়তি রোগীর চাপ আসতে পারে, এমন শঙ্কা তৈরি হয়। এ জন্য বাড়তি দুই ওয়ার্ড প্রস্তুত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগমুহূর্তে এখানে ৫৯টি শয্যা বাড়ানো হয়। তবে ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত রোগীর তেমন বাড়তি চাপ আসেনি। বরং এই সময়ে কিছু বেড ফাঁকা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এখানে ৫১৩ বেডের বিপরীতে ৪১৫ জন রোগী ভর্তি ছিল। হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঈদের আগের দিন থেকেই করোনা ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা কমেছে। গত ১৪ জুলাই এখানে ভর্তি ছিল ৫০০ জন, ১৫ তারিখ ছিল ৫০৭, ১৬ জুলাই ৪৯৮, ১৭ জুলাই ৫২৭, ১৮ জুলাই ৫০৬, ১৯ জুলাই ৫০৮, ২০ জুলাই ৪৮০ ও ২১ জুলাই ভর্তি ছিল ৪৩৭ জন। ঈদের পরের দিন গত ২২ জুলাই সকালে করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিল ৪৩৪ জন, ২৩ তারিখ ছিল ৪১২, ২৪ তারিখ ৪১৯, ২৫ জুলাই ছিল ৪১৬, ২৬ জুলাই ছিল ৩৯৯ ও ২৭ জুলাই ছিল ৩৯৯ জন। ২৮ জুলাই এখানে ভর্তি ছিল ৪০৩ জন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, ‘ঈদের পর আমাদের এখানে কিছুটা চাপ বাড়ার আশঙ্কা থাকে। এমন শঙ্কায় আমরা ১০০ বেড সেন্ট্রাল অক্সিজেন যুক্ত করে রেখেছিলাম। ঈদের পর আমাদের ওয়ার্ডগুলোর বারান্দায় যে বেডগুলো ছিল, সেগুলো আগে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দিয়ে চালাতাম। এখন এগুলোতেও আমরা সেন্ট্রাল অক্সিজেনের লাইন লাগিয়ে দিয়েছি।
‘যার ফলে আমাদের ঈদের পর সেন্ট্রাল অক্সিজেনের লাইন বেড়ে ৫১৩টি হয়েছে। পাশাপাশি আমরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডকে ৫০টি অক্সিজেন লাইন দিয়ে রেডি করে রেখেছি। তবে সেটি এখনো চালু করিনি। এটি চালু হলে অন্য রোগীরা ভুক্তভোগী হবেন। যেহেতেু এগুলো দিয়েই আমরা চালিয়ে নিতে পারছি। তাই এটি করোনা ইউনিটে যুক্ত করা হয়নি। প্রয়োজন হলেই সেটি যুক্ত করব।’তিনি বলেন, ‘ঈদের পর করোনা পরিস্থিতি একটু কমে আসছে। আমাদের রোগীর সংখ্যাও কমেছে। এখন বেডের থেকে রোগী কম। ঈদে মানুষের অবাধ চলাচলের কারণে রোগীর সংখ্যা আবার বেড়ে যায় কি না, সেদিকে নজর রাখছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।’