করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা সহজলভ্য করতে উপজেলা পর্যায়েও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চালুর পরিকল্পনা চলছে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দেশের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল বুলেটিনে অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘উপজেলাতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার ব্যবস্থা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। আমরা যদি সমস্ত আয়োজন করতে পারি তবে এই ব্যবস্থাকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। আমরা চেষ্টা করব সেটিকে উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে।’
কারও শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব আছে কি না, তা দ্রুত সময়ের মধ্যে জানার পদ্ধতি হলো অ্যান্টিজেন টেস্ট। এ পদ্ধতিতে করোনা শনাক্তের জন্য ব্যক্তি বা প্রাণীর নাক বা মুখ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
তবে সারা বিশ্বে করোনা শনাক্তের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন বা আরটি-পিসিআর পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে রিপোর্ট হাতে পেতে অনেকটা সময়সাপেক্ষ।
দেশে করোনা পরীক্ষা কার্যক্রম গতিশীল করতে অ্যান্টিজেন টেস্ট চালুর জন্য বিশেষজ্ঞদের তাগিদের পর গত বছরের অক্টোবর মাসে এই পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষার অনুমতি দেয় সরকার।
এর দুই মাস পর ডিসেম্বর মাসে প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয় ১০ জেলায়। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং করোনার ডেল্টা ধরন বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়ার পর অ্যান্টিজেন টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়।
করোনারোধী টিকা প্রয়োগের ক্ষেত্রে শুরুতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার উপর নির্ভর করে আসছিল সরকার। এই টিকার ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ পেতে সিরামের সঙ্গে চুক্তিও হয়। কিন্তু দুই ধাপে ৭০ লাখ ডোজ টিকা আসার পর ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বাকি দিতে পারছে না প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। তাদের দ্বিতীয় ডোজ শেষ করতে বিকল্প উৎস থেকে টিকা খোঁজা হচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে বিভিন্ন দেশকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি জাপান থেকে আসে অ্যাস্ট্রাজেনেকার আড়াই লাখ ডোজ টিকা। দফায় দফায় ঢাকাকে ৩০ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ডোজ দেয়ার কতা টোকিওর।
যাদেরকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ এখনও দেখা হয়নি তাদেরকে কবে থেকে এ টিকা দেয়া হবে এমন প্রশ্নে নাজমুল বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কিছু গোজগাজ করার বিষয় আছে অক্সফোর্ডের টিকা নিয়ে। আশা করছি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করে দিতে পারব।’
করোনারোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংখ্যা নিয়ে কথা বলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘আমরা শয্যা সংখ্যা বাড়িয়েছি। ফিল্ড লেভেলে হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের যে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল আছে সেখানেও শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’
উপজেলা পর্যায়ে আগে বাসা থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হতো। এটি এখন বন্ধ আছে। তা আবার চালু করা হবে কি না এমন প্রশ্নে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন জেলা উপজেলাতে বাসা থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ আপাতত টেকনিশিয়ান সল্পতার কারণে বন্ধ আছে। এটি দ্রুতই আবার শুরু হবে।’