মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। এর মধ্যে মাত্র একজন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আগের দিন রোগী শনাক্তের সংখ্যা ছিল ১২৩। সেদিন ঢাকার বাইরে রোগীর সংখ্যা ছিল তিনজন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯৪৫ জন রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৪৩৩ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫১২ রোগী। ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫০০ জন। ঢাকার বাইরে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১১ জন।
করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর এই বিস্তার নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে সরকার। খোদ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম আশঙ্কা করছেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
মেয়রের আক্ষেপ, তারা রোগীর তথ্য পাচ্ছেন না। হাসপাতালে যে নাম-ঠিকানা লিপিবদ্ধ হয়, সেটিও সঠিক নয়। ফলে কোন কোন এলাকায় আসলে রোগী বেশি, সেই বিষয়ে নগর কর্তৃপক্ষের ধারণা থাকে না। আর এ কারণে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন।
ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ায় মশার মাধ্যমে। আর অন্য মশার সঙ্গে ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী এডিস মশার পার্থক্য আছে। এই মশাগুলোর জন্ম হয় ঘরের আবদ্ধ পরিবেশে। ফলে নাগরিকরা সচেতন না হলে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন।
এডিসের উপযোগী পরিবেশ দেখা গেলে ভবনে অভিযান চালিয়ে নানা সময় নগর কর্তৃপক্ষ জরিমানা করেছে। আর এ কারণেই মূলত এই লুকোচুরি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরেও জ্বর থাকে। তাই জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের করোনা পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ডেঙ্গু পরীক্ষাও করতে হবে এবং পরীক্ষাপ্রাপ্ত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই রোগীর পরবর্তী চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।’
উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরুষ ও নারীদের জন্য মেডিসিন বিভাগে ২৬ শয্যার এবং শিশুদের জন্য শিশু বিভাগে ১২ শয্যার ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে।’
ডেঙ্গ জ্বর প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে মশা নিধন কার্যক্রম আরো জোরদার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার, এডিস মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করাসহ অন্যান্য উদ্যোগ বাস্তবায়নের আহ্বানও জানান তিনি।
এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধে বাসাবাড়ি ও আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখা, বিশেষ করে তিন দিন যেন পানি জমতে না পারে, সেদিকে দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেয়া হয়। এই মশার জন্ম হয় জমে থাকা এই পরিষ্কার পানিতে। আর মশাগুলো ঘরোয়া পরিবেশে ডিম দিতে পছন্দ করে।