প্রান্তিক পর্যায়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী গণটিকা কার্যক্রম জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বেরিয়ে আসার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করতে। ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম যেন ওয়ার্ড থেকে শুরু হয়ে যায়।’
দেশের প্রান্তিক এলাকার বয়স্ক মানুষকে টিকার আওতায় আনতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দেশের ইউনিয়ন, উপজেলা এবং ওয়ার্ডে যে সমস্ত বয়স্ক লোক আছেন, তাদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাদের মধ্যে ভ্যাকসিন নেয়ার একটা অনীহা আছে।
‘হাসপাতালে দেখা গেছে গ্রামের বয়স্ক লোকেরা আছেন ৭৫ শতাংশ। ঢাকা শহরেও বিভিন্ন গ্রাম থেকে তারা এসেছেন। তাদের মৃত্যুর সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৯০ শতাংশ।’
সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের মধ্যে যারা এখনও টিকার আওতায় আসেননি, তাদেরও দ্রুত টিকা দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পরিবারকে এবং সেই পরিবারে যদি কোনো ড্রাইভার থাকে, তাদেরকেও টিকা দিতে বলা হয়েছে। ১৮ বছরের ওপরে যারা আছেন, তারাও টিকা পেয়ে যাবেন। আমরা আশা করছি, এই কাজটা আমরা অতিদ্রুত শুরু করে দেব।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকে করোনার পরীক্ষা বাড়াতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এসেছে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘টেস্টের বিষয়েও জোর দেয়া হয়েছে। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা টেস্ট করতে চান না। কারণ, তারা মনে করেন টেস্ট করার পর যদি প্রমাণিত হয় তারা সংক্রমিত, তাহলে গ্রামের লোকেরা কিছুটা হলেও একঘরে করে। এ কারণে অনেক সময় তারা লুকিয়ে যান। তাদের তথ্য লুকানোর ফলে আরও বেশি সংক্রমিত হয়।’
আগস্ট থেকে গ্রামে গ্রামে গণটিকা কার্যক্রম চালু করা হবে বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর নিউজবাংলাকে জানান, গ্রামের মানুষের টিকা নিশ্চিতে আগামী মাস থেকে ক্যাম্পেইন করে টিকা দেয়া হবে। শিশুদের বেশ কয়েকটি রোগ থেকে প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি যেভাবে বাস্তবায়ন হয় অনেকটা সেভাবেই গ্রামে করোনা টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে।
আলমগীর বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে যেসব টিকাদানকেন্দ্র রয়েছে, এসব টিকাদান কেন্দ্রে করোনার টিকা দেয়া হবে। সেখানে এসে মানুষ টিকা নিতে পারবেন। টিকা নিতে আসার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে টিকার ক্যাম্পেইন চলবে। এ সময়ের মধ্যে ৬০ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।