করোনা ও উপসর্গে দেশের কয়েক জেলা মিলে ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ২৩ জন, বরিশালে ১৮, রাজশাহী ও বগুড়া ১৭ জন করে মারা গেছেন।
রোববার সকাল থেকে সোমবার সকালের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
এই সময়ের এসব জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৯ শরও বেশি মানুষ।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৯ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও ১৪ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান। যা এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, বর্তমানে করোনা ইউনিটে ৪৫৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭০ জনের ফল পজিটিভ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ১৯ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় নতুন করে ১ হাজার ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৭০ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে করোনায় ৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ১৬ জন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, এক দিনে বরিশাল বিভাগে করোনা শনাক্ত হয় ৮৪১ জনের দেহে। এর মধ্যে বরিশালে শনাক্তের সংখ্যা ৩৮২ জন, পটুয়াখালীতে ১০৭, ভোলায় ১৩৭, পিরোজপুরে ৭৬, বরগুনায় ৭৯ ও ঝালকাঠিতে ৬০ জন।
এদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৮৩ জন ভর্তি রয়েছে।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা শনাক্ত হয়ে ৮ জন ও উপসর্গে ৯ জন মারা গেছেন।
এ নিয়ে চলতি মাসের ২৫ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৪৫৩ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিলেন ১৫২ জন আর উপসর্গ নিয়ে মারা যান ৩০১ জন।
হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, করোনা ওয়ার্ডে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৪২ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫০ জন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন ৩৯৯ জন। এর মধ্যে ১৭৪ জনের করোনা পজেটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৪৭ জন। এছাড়া করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় চিকিৎসাধীন ৭৮ জন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে, রোববার জেলায় ১ হাজার ৫০৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৬৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বগুড়া
জেলায় এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ২ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে জেলায় সুস্থ হয়েছেন ১৩৭ জন।
জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহীন জানান, এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৪২ জনে।
যদিও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হিসাব বলছে, বগুড়ায় এ পর্যন্ত ৫২১ জন মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। হিসাবের এই ফারাকের কারণ হলো, বগুড়ায় করোনা শনাক্ত হয়ে অন্য জেলার বাসিন্দা মারা গেলে সে হিসাব এই দপ্তর আলাদাভাবে সংরক্ষণ করে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে, নতুন করে ৬২২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এর মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজের (শজিমেক) পিসিআর ল্যাবে ২৮২ নমুনায় ৮২ জন, টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে ৪৭ নমুনায় ২৬ জন করোনা পজিটিভ হন।
এ ছাড়া অ্যান্টিজেন ও জিন এক্সপার্ট যন্ত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা করে ৬২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
সিলেট
সিলেট বিভাগে সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে এইটিই করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।
এ নিয়ে বিভাগে মোট মৃতের সংখ্যা ৬৩১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) সুলতানা রাজিয়া স্বাক্ষরিত কোভিড-১৯ কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের দৈনিক প্রতিবেদনে সোমবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, একদিনে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫৬৪ জনের। এ সময় সুস্থ হয়েছেন ৪২৪ জন। আর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১০৭ জন করোনা রোগী।
বিভাগে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৬ হাজার ২১০ জনের। এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৭৯ জন।
আর বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা মোট ২৮ হাজার ৮৮৩ জন।
বিভাগে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ১০ জন সিলেট জেলার, সুনামগঞ্জের ৩ জন ও একজন হবিগঞ্জ জেলার।
চট্টগ্রাম
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে, জেলায় করোনায় মারা গেছেন ১২ জন। এই সময়ে জেলায় নয়টি ল্যাবে ২ হাজার ২৮২টি নমুনা ও অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৮৪৮ জনের।
কুষ্টিয়ায় ১১ জন করোনায় ও ১ জনের করোনার উপসর্গ নিয়া মারা গেছেন। এ সময়ে ২২৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ২৩৮ জন।
মেহেরপুরে করোনায় ৩ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এক দিনে সুস্থ হয়েছে ১০০ জন। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৬০ জনের দেহে।
দিনাজপুরে করোনা ও উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু হয়। নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১০৩ জনের দেহে। এই জেলায় এখন ১ হাজার ২৪৯ জন করোনা শনাক্ত রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
সাতক্ষীরায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে ১১২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
নেত্রকোণায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক দিনে শনাক্ত হয়েছে ৬৮ জন।