করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জেলায় ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন ও ময়মনসিংহে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫ ও রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৪ জন করোনা ইউনিটে মারা গেছেন।
শনিবার সকাল থেকে রোববার সকালের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
কুষ্টিয়া
জেলায় এক দিনে করোনায় ১৫ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কোভিড ডেডিকেটেড কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, করোনা শনাক্ত হয়ে ১৪৮ রোগীসহ মোট ২০৮ রোগী সেখানে ভর্তি আছেন।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, এক দিনে ৮৪১টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ সময়ে করোনা মুক্ত হয়েছে ২০০ জন।
গত ৭ দিনে কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ১ হাজার ২৩২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ পর্যন্ত জেলায় করোনা পজিটিভ ৪৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩ হাজার ১৯৯ জনের।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনায় ১০ জন ও উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, রোববার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ৪৭৮ জন চিকিৎসাধীন। ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ৩০৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি ২১ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৬৪ জন। এ ছাড়া এক দিনে ৩২ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, নতুন করে ৬৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৩২ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৬ হাজার ৮৪৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ৪৮৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৯ হাজার ১৮৩ জন সুস্থ হন।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে এক দিনে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১১ জন।
মৃত ব্যক্তিদের সবাই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন।
এই নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪২০ জন হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, নতুন করে ৭৬৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে বরিশালে শনাক্তের সংখ্যা ২৭৩ জন, পটুয়াখালীতে ১০৬, ভোলায় ১০২, পিরোজপুরে ৫৯, বরগুনায় ১১৯ ও ঝালকাঠিতে ১০৭ জন।
বরিশাল বিভাগে মোট ২৮ হাজার ৯১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এ পর্যন্ত।
এদিকে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোববার সকাল পর্যন্ত ৩৩০ জন ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে ১৩৬ জন করোনা পজিটিভ। এই ইউনিটে ৬০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা শনাক্ত হয়ে ১০ জন ও উপসর্গে ৪ জন মারা গেছেন।
এ নিয়ে চলতি মাসের ২৪ দিনে এই হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৪৩৬ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিলেন ১৪৪ জন আর উপসর্গ নিয়ে মারা যান ২৯২ জন।
হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ওয়ার্ডে নতুন ভর্তি হয়েছে ৫০ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫০ জন।
রোববার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন ৪১৬ জন। এর মধ্যে ১৭৮ জনের করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছে ১৮৮ জন। এ ছাড়া করোনা পরবর্তী জটিলতা নিয়ে ভর্তি আছেন ৫০ জন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাজশাহীতে ১ হাজার ৬১১টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৪ ভাগ।
বগুড়া
জেলায় এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৭ জনের। এ সময়ে সুস্থ হয়েছে ২১২ জন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহীন জানান, এ নিয়ে জেলায় করোনায় শনাক্ত হয়ে ৫৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যদিও জেলা সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব বলছে, বগুড়ায় এ পর্যন্ত ৫২৬ জন মারা গেছেন করোনায়। হিসাবের এই ফারাকের কারণ হলো, জেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে অন্য জেলার বাসিন্দা মারা গেলে সে হিসাব এই দপ্তর আলাদাভাবে সংরক্ষণ করে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে, জেলায় নতুন করে ৮৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৪২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১৮ হাজার ৯৪ জনের করোনায় শনাক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮০১ জনের। এ সময়ে মারা গেছেন ১১ জন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে, গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারের একটি ও চট্টগ্রামের আটটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে ৮০১ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে ৪৬৯ জন শহরের এবং ৩৩২ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৫ হাজার ৩৬৩ জনের।
করোনায় এ জেলায় মারা গেছেন ৮৮৫ জন।
চুয়াডাঙ্গা
জেলায় এক দিনে করোনায় ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১০ জন; সুস্থ হয়েছেন ২১৯ জন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা এএসএম ফাতেহ আকরাম জানান, নতুন করে ৩৩২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৯ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ২০ শতাংশ।
বর্তমানে হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন ১০৪ জন ও বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন ১ হাজার ৭৮৩ জন।
এছাড়া করোনা ও উপসর্গ নিয়ে সাতক্ষীরায় ৯ জন, মেহেরপুরে ৮, ঝিনাইদহে ৪ ও নেত্রকোণায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।