করোনাভাইরাস প্রতিরোধী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার সংকটের কারণে রোজার ঈদের পর থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম দফা টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন ১৪ লাখ মানুষ।
এর মধ্যে আরও তিন ধরনের টিকার চালান দেশে এসেছে। কিন্তু অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জট খুলছিল না। অনেকের প্রথম ডোজ টিকা নেয়ার পর পাঁচ থেকে ছয় মাস পার হয়ে গেছে।
অবশেষে জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ টিকা দেশে আসার পর দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবার শুরু হচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার কাজ।
এই টিকা ঢাকাসহ আশপাশের দুই-একটি জেলায় দ্রুত সময়ে মধ্যে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
আগামী শুক্রবার আরও ৪ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেশে আসছে। এ মাসের মধ্যেই ১৪ লাখ মানুষের অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ডা. শামসুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ (শনিবার) যে টিকা এলো এর পরিমাণ খুবই কম। আমরা চিন্তা করছি যে, হয়তো অল্প সময়ের মধ্যে এই টিকা দেয়া শুরু হবে। ইতোমধ্যে আমরা ম্যাপ করে ফেলেছি কোন জেলায় কী পরিমাণ টিকা প্রয়োজন।’
ডা. শামসুল হক বলেন, যে টিকা হাতে আছে, তা দিয়ে এক বা দুটি বিভাগে সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হতে পারে। এরপর জাপান থেকে টিকার বাকি চালান এলে সব জেলায় তা দেয়া হবে। এ জন্য দরকার ১৪ লাখ ডোজ। জাপান থেকে পাওয়া যাবে ৩০ লাখ ডোজ টিকা।
বিশ্বজুড়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে গড়ে তোলা প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিচ্ছে জাপান।
এই টিকা প্রথম দফায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কিনেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সরবরাহ সংকটে যারা প্রথম ডোজ নিয়েছিলেন, তাদের সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যায়নি। জাপান থেকে আসা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়েই শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া।
চুক্তি অনুযায়ী করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ৩ কোটি টিকা দেশে আসার কথা থাকলেও মাত্র ৭০ লাখ ডোজ দিয়েই টিকা দেয়া বন্ধ করে দেয় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এমনকি এ বছরের শেষে ছাড়া অন্য কোনো দেশকে তারা টিকা দিতে পারবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়ে বিপাকে পড়ে সরকার। তাদের দ্বিতীয় ডোজ শেষ করতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে বিভিন্ন দেশকে চিঠি দেয়া হয়।