করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে অনেকের প্রয়োজন না হলেও রোগীর জন্য স্বজনেরা হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) সেবা চেয়ে থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি শীর্ষক সভায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আইসিইউয়ের ডিমান্ড অনেক বেশি। প্রয়োজন না হলেও অনেক রোগীর লোক আইসিইউ ডিমান্ড করে। তবে আমরা বেড বাড়াচ্ছি। আপনারা জানেন আগের তুলনায় সংক্রমণ ছয়গুণ বেড়েছে। মৃত্যু বেড়েছে দশগুণ। আইসিইউ বেডের চাহিদা দশগুণ বেড়েছে, অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে পাঁচগুণ।’
করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য সারা দেশের স্বাস্থ্য অবকাঠামোর পরিস্থিতি তুলে ধরে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের এখন ঢাকা শহরে কোভিড বেডের সংখ্যা ৫ হাজার ৭০০। আর সারা দেশ মিলিয়ে ১৫ হাজারের মত। আইসিইউ-এর ক্ষেত্রে একটা ভিন্নতা আছে। সাধারণ আইসিইউ ও কোভিড আইসিইউ মিলিয়ে আমাদের ৮০০ থেকে ১২ শ আইসিইউ রয়েছে।
‘সরকার ৪৩টা অক্সিজেন জেনারেটর অর্ডার করেছে। আমাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা ২৫০টি ভ্যান্টিলেটর বিনামূল্যে দিয়েছে। সেগুলো আজ দেশে আসছে। এ ছাড়া, সরকার থেকে ৩৫০ ক্রয় করা হচ্ছে।’
দেশের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে সমালোচকদের একহাত নেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তার মতে, দেশে এত সমস্যা থাকতেও না জেনে সবাই স্বাস্থ্যখাত নিয়ে সমালোচনা করছেন।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। গত দেড় বছর ধরে তার তো করোনার ভেতরেই রয়েছেন। আপনারা নিরাপদ জায়গা থেকে সমালোচনা করেন। টিভি শোতে গিয়ে কথা বলেন।
‘কই নদী দখল হয়ে যাচ্ছে; নদী শেষ হয়ে যাচ্ছে কাউকে কথা বলতে দেখি না। ক্যামিকেল দিয়ে খাবার খাওয়ানো হচ্ছে, প্লাস্টিক দূষণ হচ্ছে কেউ তো কথা বলেন না। ট্যাক্স পে করে না, বিল দেয় না, অবৈধ পথে ইউরোপ যাচ্ছে তাদের নিয়ে কথা বলেন না। শুধু যারা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কথা।’
জাহিদ মালেকের দাবি, ‘স্বাস্থ্যসেবা ভালো বলে সব ঠিক আছে। ইকোনোমি আমাদের ঠিক আছে, জিডিপি ঠিক আছে। আমাদের দেশে মৃত্যু অনেক কম।’
ঈদের সময় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঈদে হাটে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানে নাই। যে যার মত করে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করেছে। মানুষ গ্রামে যাচ্ছে। এই যে দেখেন, গাড়ি বন্ধ তাও মানুষ হেঁটে যাওয়া-আসা করছে। এটা কেমন কথা। এখন তো আর কেউ বলতে পারবে না যে সে স্বাস্থ্যবিধির কথা জানে না। এখন সবাই জানে।’