করোনা শনাক্ত হয়ে খুলনা বিভাগে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া করোনা ও উপসর্গ নিয়ে বগুড়ায় ২৬ জন, কুষ্টিয়া ও ময়মনসিংহে ১৪, রাজশাহীতে ১১, মেহেরপুরে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকালের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা
এক দিনে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় করোনায় ৩৩ জন মারা গেছেন। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৪৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৃত ৩৩ জনের মধ্যে কুষ্টিয়ায় ১৫ জন, খুলনায় ৮, যশোরে ৬; নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও মেহেরপুরে ১ জন করে মারা গেছেন।
এ পর্যন্ত বিভাগে মোট শনাক্ত হয়েছে ৮৫ হাজার ৭৮৪ জন, মারা গেছেন ২ হাজার ১২৬ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৯ হাজার ৯৭৩ জন।
বগুড়া
জেলায় এক দিনে করোনায় ৮ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে দুইজন অন্য জেলার বাসিন্দা রয়েছেন।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল, মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ও টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাদের মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৫২১ জনে।
জেলা ডেপুটি সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, জেলায় নতুন করে ৩৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪৪ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১৩৬ জন। নমুনা পরীক্ষায় জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৪১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
বর্তমানে জেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৯০৯ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫৫১ জন। বাকিরা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কুষ্টিয়া
করোনা নিয়ে ১৩ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে এ জেলায়।
এ ছাড়া এক দিনে ২০৭টি নমুনা পরীক্ষায় আরও ৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে।
কুষ্টিয়া করোনা ডেডিকেডেট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মোমেন জানান, এ হাসপাতালে ভর্তি আছে ২২৮ জন। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত রোগীই ১৬৮ জন। বাকিরা করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছেন। প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীদের অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে।
গত ৭ দিনে কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্ত ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৭৭ জনের।
এ পর্যন্ত শুধুমাত্র করোনা শনাক্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ৪৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনায় ২ জন ও উপসর্গে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ৪২৬ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ২২৫ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি ২২ রোগী। নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৬৬ জন। এক দিনে ১৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় ৩৮৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৬ হাজার ১৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ৩০১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯৫৩ জন সুস্থ হয়েছে।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ৭ জন ও উপসর্গে ৪ জন মারা গেছেন।
মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৬ জন, পাবনার ২, নাটোর, নওগাঁ ও কুষ্টিয়ার ১ জন।
এ নিয়ে চলতি মাসের ২৩ দিনে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেছেন ৪২২ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিলেন ১৩৪ জন আর উপসর্গ নিয়ে মারা যান ২৮৮ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, এক দিনে করোনা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি হয়েছে ৫৭ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৩৭ জন।
শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ভর্তি ছিলেন ৪১৯ জন। তার মধ্যে ১৯৪ জনের করোনা পজেটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭২ জন। এ ছাড়া করোনামুক্ত হয়েও পরে স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৫৩ জন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাজশাহীতে ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৬৫ ভাগ।
মেহেরপুর
জেলা সিভিল সার্জন নাসির উদ্দিন জানান, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ১ জন ও উপসর্গ নিয়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় অফিস বলছে, শুক্রবার ৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫২ দশমিক ২৭ ভাগ।
জেলায় বর্তমানে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ৬৪৪ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ১৪৪ জন। গাংনীতে ৩৬৭ ও মুজিবনগরে ১১৩ জন।
আর জেলায় মৃতের সংখ্যা ১২০ জন। যার মধ্যে সদর উপজেলায় ৫৪ জন, গাংনীর ৪২ ও মুজিবনগরের ২৪ জন।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ও উপসর্গে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ পর্যন্ত জেলায় মারা গেছেন ৫০২ জন। করোনা শনাক্ত হয়ে মারা গেছেন ৮২ জন।
নতুন করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা শনাক্ত হয়ে রোগী ভর্তি হয়েছে ২৫ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩ জন।
শনিবার সকাল পর্যন্ত করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাপসাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৮৩ ও বেসরকারি হাসপাতালে এ সংখ্যা ২৭ জন।
হোম আইসোলেশনে আছে ১ হাজার ১৯ জন। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২২২ জন।