করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রাজশাহীতে ২২ জন, ময়মনসিংহে ২০, বরিশালে ২০, কুষ্টিয়ায় ১৭, বগুড়ায় ১৫ ও সাতক্ষীরায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা শনাক্ত হয়ে ৬ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১৫ জন মারা গেছেন। নেগেটিভ হওয়ার পরে একজন মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, রামেক হাসপাতালে মারা যাওয়া ২২ জনের মধ্যে রাজশাহীর ১১, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পাবনার ৪ জন করে, নাটোরের ২ এবং নওগাঁর ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় রামেকে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৬১ রোগী। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৪১২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬২ জন
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৩ ভাগ।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ৯ জন ও উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১১ জন।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, বর্তমানে করোনা ইউনিটে ৩৭৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ২২৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২১ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৭০ জন। এক দিনে ৫৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ২৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৭৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ২১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৬১২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে ৭ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও ১৩ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এ সময় বিভাগে করোনা শনাক্ত হয় ১৮৩ জনের দেহে।
মৃতদের মধ্যে ১৫ জনই বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এই নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪১৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, নতুন করে শনাক্ত হওয়া ১৮৩ জনের মধ্যে বরিশালের ১০৯ জন, পটুয়াখালীতে ৮, ভোলায় ৪৯, পিরোজপুরে ৯, বরগুনায় ৪ ও ঝালকাঠিতে ৪ জন।
বরিশাল বিভাগে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৯৯৫।
এদিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৭৭ জন ভর্তি আছেন। যার মধ্যে ১০১ জনের করোনা পজিটিভ।
এই ইউনিটে ৫২ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
কুষ্টিয়া
কোভিড ডেডিকেটেড কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনায় ১১ জন ও উপসর্গে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, নতুন করে ১৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৭ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ২ শতাংশ।
হাসপাতালে করোনা পজিটিভ ১৭৯ জন আর উপর্সগ নিয়ে ৫৭ জন মোট ২৩৬ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় বাড়ি ফিরেছেন ১৮৯ জন।
বগুড়া
বগুড়ায় তিন হাসপাতালে এক দিনে করোনায় ১ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল, মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ও টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এদের মৃত্যু হয়।
জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৫২৭।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার সাজ্জাদ-উল-হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২১৫টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৮৪ জন। একই সময়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৮২ জন। নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে জেলায় করোনা শনাক্তের হার ৩৯ শতাংশ।
তিনি বলেন, বর্তমানে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ৯০৭ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৫১৯ জন। বাকিরা বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরায় ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন। প্রধান প্রধান সড়কে পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেলেও অন্যান্য সড়কে প্রশাসনিক তৎপরতা একেবারে নেই। ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলের হাটবাজারগুলোতে জনসমাগম রয়েছে। সড়কে চলাচল করছে প্রায় সব ধরনের যান।
এদিকে এক দিনে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা উপসর্গে মারা গেলেন ৪৯৮ জন।