ঈদের দিনে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রাজশাহী ও ময়মনসিংহে ১৮ জন করে, বরিশাল বিভাগে ১৬ জন, ঝিনাইদহে ৯ ও নেত্রকোণায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টার মধ্যে তারা মারা গেছেন।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নতুন করে ৪ জন করোনায় আর ১৪ জন উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
চলতি মাসে এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৩৬৭ জন। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ ছিল ১১৪জন আর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ২৫৩ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, ২৪ ঘণ্টায় করোনা ওয়ার্ডে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৪৫ জন। এ সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭২ জন।
বুধবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ভর্তি আছেন ৪৩৭ জন। যার মধ্যে ২১৭ জনের করোনা পজিটিভ। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৬০ জন। এ ছাড়াও করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতা নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬০ জন।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, মঙ্গলবার রাজশাহীতে ৭১১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১১ দশমিক ২৫ ভাগ।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ৬ জন ও উপসর্গ নিয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২৭৪ জন।
মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫ জনই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এই নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে বরিশালের ৯০ জন, পটুয়াখালীতে ৪০, ভোলায় ৪৫, পিরোজপুরে ৫৮, বরগুনায় ৩ ও ঝালকাঠিতে ৩৮ জন।
বরিশাল বিভাগে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৬৬৩ জন।
এদিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৩০২ জন ভর্তি।
যার মধ্যে ১১৫ জনের করোনা পজিটিভ। এই ইউনিটে ৩৫ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও ১১ জন উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, বর্তমানে করোনা ইউনিটে ৩৩৯ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ১৪২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২২ জন।
হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ জন। এ সময় ৮১ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন।
সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার রাতে ৪৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় আক্রান্তের হার ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৫ হাজার ২৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ হাজার ৮০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫৯৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
ঝিনাইদহ
২৪ ঘণ্টায় ঝিনাইদহে করোনা শনাক্ত হয়ে ৭ জন ও উপসর্গ নিয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ১৬৬ জন।
সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম জানান, বুধবার সকালে ঝিনাইদহ ল্যাব থেকে ৪০৫টি নমুনা পরীক্ষ করে ১৬৬ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। আক্রান্তের হার ৪০ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ৭ জন ও হরিণাকুন্ডুতে মারা গেছেন ২ জন।
নেত্রকোণা
এক দিনে নেত্রকোণায় করোনা শনাক্ত হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র উত্তম কুমার পাল জানান, এই সময়ে মধ্যে ৭৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার শতকরা ৩২ দশমিক ৯১ শতাংশ।
জেলায় এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮০০ জন। সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৬৩৮ জন। হাসপাতাল ও নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ১৬২ জন। মারা গেছেন ৬২ জন।