করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ময়মনসিংহে ২১ জন, রাজশাহীতে ২০, বরিশালে ১৮, চট্টগ্রামে ১৫, খুলনায় ১৩ ও কুষ্টিয়ায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক দিনে সর্বোচ্চ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৭ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেন হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ফোকাল পারসন মহিউদ্দিন খান মুন জানান, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত করোনা ইউনিটে ৩৯২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভর্তি হওয়া রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করে ২০৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি আছেন ২১ জন। নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন নজরুল ইসলাম জানান, জেলায় নতুন করে ৯২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলায় আক্রান্তের হার ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ পর্যন্ত ৯৪ হাজার ৮৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ হাজার ৯৮২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫৮৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
রাজশাহী
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে শনাক্ত হয়ে ৪ জন ও উপসর্গে ১৬ জন মারা গেছেন।
করোনা শনাক্ত হয়ে এ নিয়ে চলতি মাসের ২০ দিনে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মোট ৩৪৯ জনের মৃত্যু হলো। তাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ১১০ জন আর উপসর্গ নিয়ে মারা যান ২৩৯ জন।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক শামীম ইয়াজদানী জানান, করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। আর এ সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭২ জন।
মঙ্গলবার সকালে রামেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটের ৪৫৪টি শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৪৮০ জন।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের সূত্র অনুসারে, সোমবার রাজশাহীতে ১ হাজার ৫২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২২২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬০ ভাগ।
বরিশাল
বরিশাল বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন করোনা শনাক্ত হয়ে ও উপসর্গে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬১১ জনের দেহে।
এ নিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩৯৩-এ দাঁড়িয়েছে।
মৃতদের মধ্যে ১৩ জন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬১১ জন শনাক্ত হয়েছেন। যার মধ্যে বরিশালে শনাক্তের সংখ্যা ২৬৩, পটুয়াখালীতে ৬৩, ভোলায় ৬৪, পিরোজপুরে ৬৩, বরগুনায় ৭৯ ও ঝালকাঠিতে ৭৯।
বিভাগে মোট করোনা শনাক্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৮৯।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট করোনা ইউনিটে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৩০৫ জন ভর্তি রয়েছেন, যার মধ্যে ১১৫ জনের করোনা পজিটিভ। এই ইউনিটে ৪৬ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে এক দিনে করোনা শনাক্ত হয়ে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। আর আগে ১১ জুলাই সর্বোচ্চ ১৪ জনের মৃত্যু হয়।
এ সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৯২৫ জন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায় গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনায় মৃতদের মধ্যে ৫ জন মহানগর ও ১০ জন উপজেলার বাসিন্দা।এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে কারোনা শনাক্ত হয়ে চট্টগ্রামে মারা গেছেন ৮৫৬ জন।
সোমবার রাতে চট্টগ্রামের ১০টি ও কক্সবাজারের ১টি ল্যাবে ২ হাজার ৫৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯২৫ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৫৫৩ জন মহানগরের ও ৩৭২ জন উপজেলার বাসিন্দা।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে মোট শনাক্ত হয়েছেন ৭২ হাজার ৫৯২ জন।
খুলনা
খুলনার ৫ হাসপাতালে এক দিনে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর মধ্যে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৫ জন, জেলা জেনারেল হাসপাতালে ১, গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১, সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩ ও আবু নাসের হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ডেডিকেটেড হাসপাতালের ফোকাল পারসন সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, এ হাসপাতালে করোনা নিয়ে ৪ ও উপসর্গ নিয়ে ১ জন মারা গেছেন।
এ ছাড়া এ হাসপাতালে ১৩৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যার মধ্যে রেড জোনে ৫৪ জন, ইয়েলো জোনে ৪৫ জন, এইচডিইউতে ১৯ ও আইসিইউতে ২০ জন। নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৩৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮ জন।
গাজী মেডিক্যালের স্বত্বাধিকারী গাজী মিজানুর রহমান জানান, এই হাসপাতালে খুলনার ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ৭৮ রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে ৭ ও এইচডিইউতে ৮ জন। এক দিনে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন।
জেলা জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র আবু রাশেদ জানান, এ হাসপাতালে বাগেরহাটের ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ হাসপাতালে মোট রোগী রয়েছেন ৫২ জন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ৬ জন; বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন।
আবু নাসের হাসপাতালের মুখপাত্র প্রকাশ দেব নাথ জানান, এ হাসপাতালে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪২ জন রোগী ভর্তি, যার মধ্যে আইসিইউতে ১০ জন। এখানে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৭ জন; বাড়ি ফিরেছেন ৫ জন।
সিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এ হাসপাতালে ৬৮ রোগী ভর্তি, যার মধ্যে আইসিইউতে ১৭ ও এইচডিইউতে ৬ জন। নতুন ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন; বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।
কুষ্টিয়া
কোভিড ডেডিকেটেড কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনায় ৯ ও উপসর্গে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মোমেন জানান, হাসপাতালে বর্তমানে করোনা পজিটিভ ১৮১ ও উপর্সগ নিয়ে ৭১, মোট ২৫২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে, জেলায় এক দিনে ১ হাজার ২৫৪টি নমুনা পরীক্ষায় ৪২১ জনের দেহে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন।
এ পর্যন্ত জেলায় শুধু করোনা শনাক্ত ৪৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে।