বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১০ দিনে ১ লাখ নতুন রোগী

  •    
  • ১৮ জুলাই, ২০২১ ২১:৪২

দেশে করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছিল গত বছরের জুন মাস থেকে। শীতকালে সেটা কমে আসে। এখন দ্বিতীয় ঢেউ তুঙ্গে। মৃত্যু ও সংক্রমণ দুটোই বাড়ছে।

দেশে করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় মাত্র ১০ দিনে ১ লাখ নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রায় ৩৯ হাজার ৮৪৫ নমুনা পরীক্ষা করে ১১ হাজার ৫৭৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

তাতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১ লাখ ৩ হাজার ৯৮৯। গত এক দিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ২২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ১৭ হাজার ৮৯৪ জনের মৃত্যু হলো।

দেশে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ১৮ জুন তা ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ৩০ দিনের ব্যবধানে ১৮ জুলাই শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ২ লাখ। ২৬ আগস্ট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছাড়ায় ৩ লাখ। এর দুই মাস পর ২৬ অক্টোবর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর করোনা সংক্রমণের হার কমে যায়। সংক্রমিতের সংখ্যা ৫ লাখ ছাড়ায় গত ২০ ডিসেম্বর। অর্থাৎ রোগীর সংখ্যা ১ লাখ বাড়তে সময় লাগে ৫৫ দিন।

চলতি বছরে ২৯ মার্চ করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়ায়। এরপর শনাক্তের সংখ্যা ৬ লাখ থেকে ৭ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগে ১৬ দিন। ১৪ এপ্রিল তা ৭ লাখ ছড়িয়ে যায়। এর ৪৭ দিন পর ৩১ মে রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ছাড়িয়ে যায়। এরপর ৯ জুলাই ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা। ১০ দিনের মধ্যে আরও ১ লাখ বেড়ে শনাক্ত ১১ লাখ ছাড়াল রোববার।

উদ্বেগ থাকলেও প্রথম কয়েক মাসে করোনাভাইরাস সেভাবে ছড়ায়নি। তবে গত বছরের মে মাস থেকে ব্যাপকভাবে সেটি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তখন আক্রান্তের হটস্পট ছিল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের মতো জনবহুল শহরগুলো।

গত শীতে দ্বিতীয় ঢেউ আসার উদ্বেগ থাকলেও সংক্রমণ ও মৃত্যু দুটোই কমে আসে। একপর্যায়ে পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ শতাংশের নিচে নেমে যায়, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবেচনায় মহামারি নয়, নিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতি। তবে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শনাক্তের হার আবার বাড়তে থাকে। দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হওয়ার পর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ভারতে করোনার নতুন ধরন বা ভ্যারিয়েন্টের কথা জানা যায়। সেই ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্তদের দ্রুত অসুস্থ করে দেয়, তাদের অক্সিজেন লাগে বেশি। ছড়ায়ও দ্রুত, তাই মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয় ২৪ এপ্রিল। কিন্তু বিধিনিষেধ না মানায় ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকানো যায়নি।

প্রথমে ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট রাজশাহী অঞ্চলে ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরে তা ছড়ায় খুলনা বিভাগে। সেই সঙ্গে ঢাকা বিভাগের বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চল আর টাঙ্গাইল এলাকাতেও সংক্রমণ ঘটে ভাইরাসটির।

পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ায় গত ২২ জুন থেকে ঢাকাকে ঘিরে রাখা সাত জেলায় যান চলাচল বন্ধ করে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এতেও কাজ না হওয়ায় ১ জুলাই থেকে শুরু হয় শাটডাউন। সরকার জনগণের চলাচল রোধে এবার যে কঠোর, তার প্রমাণ মেলে সেনাবাহিনী মোতায়েনে।

অকারণে বাড়ির বাইরে আসায় প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ জরিমানা আদায় করা হচ্ছে, কেবল ঢাকায় আটক করা হচ্ছে কয়েক শ মানুষকে। শাটডাউন প্রথমে সাত দিনের জন্য দেয়া হলেও পরে তা বাড়ানো হয়েছে আরও সাত দিন।

এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি মধ্যে আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে চলমান শাটডাউন শিথিল করেছে সরকার। শর্ত সাপেক্ষে চালু করা হয়েছে বাসসহ গণপরিবহন। খোলা হয়েছে দোকানপাট।

শাটডাউন শিথিলের কারণে সামনের দিনগুলোতে সংক্রমণ আরও বাড়বে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলছেন, ‘দেশে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। যে কারণে সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়তে পারে। যদি আমার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি, তাহলে আশা করি, সংক্রমণ ও মৃত্যু নিয়ন্ত্রণ করতে পারব।’

করোনা নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি শাটডাউন শিথিলে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে লকডাউন ১৪ দিন বাড়ানো উচিত ছিল। সরকার থেকে বলা হয়েছে, ঈদের পর দেশ আবারও দুই সপ্তাহের শাটডাউনে যাবে।

এ বিভাগের আরো খবর