বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনায় ব্যবহার করা ইনজেকশন অ্যাক্ট্রেমরার তীব্র সংকট

  •    
  • ১৪ জুলাই, ২০২১ ২১:৩৫

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অধিকাংশ গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা এই ইনজেকশন প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদেশ থেকে চাহিদার তুলনায় কম আসছে জীবনরক্ষাকারী এই ইনজেকশন। ফলে সংকট কাটছে না।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বারডেম হাসপাতাল নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) গেল এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন আমিরুল ইসলাম। সাইটোকাইন স্ট্রোম প্রিভেন্ট করার জন্য তাকে অ্যাক্ট্রেমরা ইনজেকশন প্রয়োগের পরমর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রোগীর স্বজনরা গেল এক সপ্তাহ রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে এই ইনজেনশন পাননি। একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে রোগীর স্বজনরা জানতে পারেন ইনজেকশনটি রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস বিদেশ থেকে আমদানি করে। নিজেদের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর দুইটি কেন্দ্রে এই ইনজেকশন বিক্রি করা হয়। আমিরুল ইসলামের স্বজনেরা সেই চার কেন্দ্রের একটি কেন্দ্র ধানমন্ডিতে ইনজেকশনের সন্ধানে যান। তবে সেখানেও গিয়েও ইনজেকশনটি পাননি তারা।

কোম্পানিটি কর্মকর্তারা বলেন, রোগীর ব্যবস্থাপত্রসহ নিবন্ধন করতে হবে। ইনজেশকনের নতুন চালান এলে ফোনে জাননো হবে।

আমিরুল ইসলামের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অধিকাংশ গুরুতর রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা এই ইনজেকশন প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ করে আইসিইউতে ভর্তি রোগীদের ক্ষেত্রে। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিদেশ থেকে চাহিদার তুলনায় কম আসছে জীবনরক্ষাকারী এই ইনজেকশন। ফলে সংকট কাটছে না।

ইনজেকশনের চাহিদার সঙ্গে দামও বেড়েছে। অ্যাক্টেমেরা ইনজেকশন ২০০ ও ৪০০ মিলিগ্রামের শিশিতে পাওয়া যায়। পরিমাণের ভিত্তিতে ২১ থেকে ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তবে অভিযোগ আছে সিন্ডিকেটগুলো দাম বাড়িয়ে ৬০ থেকে ৮০ হাজারের বেশি দরে এই ইনজেনকশন বিক্রি করছে।

তবে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, দাম বাড়েনি অ্যাক্টেমেরার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধানমন্ডি অ্যাক্ট্রেমরা বিক্রি সেন্টার ইনজেকশন সংকটের কারণে মাঝে মাঝে বন্ধ করে রাখতে হয়। এমনকি যারা এই অ্যাক্ট্রেমরা ইনজেকশন কিনতে আগ্রহী তাদের ডাক্তারি ব্যবস্থাপত্রসহ নিবন্ধন করে রাখ হয়। পরে ইনজেকশন এলে ফোন করা হয়। গত দুই সপ্তাহ ধরে অ্যাক্ট্রেমরা ইনজেকশনের সংকট তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। কোম্পানি কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবার এই ইনজেকশনের নতুন চালান দেশে আসার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে আগামীকাল থেকে আবার দেশের সব ফার্মাসিতে পাওয়া যাবে।

বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলা বলেন, ‘অ্যাক্ট্রেমরা একটি ইনজেকশন। এ ইনজেকশন হার্ড ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়। যাদের ফুসফুসে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। এবং রোগীর অবস্থা গুরুতর। সেসব রোগীর ক্ষেত্রে ইমিউনিটি বাড়াতে এই ইনজেশন গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। যে কারণে এই ইনজেকশনের চাহিদা বেড়েছে।’

‘অ্যাক্ট্রেমরা সুইজারল্যান্ডের রোচে ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদন করে। এই কোম্পানি থেকে দেশে আমদানি করে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। দেশের একটি মাত্র কোম্পানি এই ইনজেকশন আমদানি করার কারণে এর সংকট রয়েছে।’

অ্যাক্ট্রেমরা ইনজেকশন কেনো বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে জানতে চাইলে বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ার পর করোনা আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থাও খুব দ্রুত খারাপ হচ্ছে। ফুসফুসে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রে রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অ্যাক্ট্রেমরা ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে অনেক রোগী এই ইনজেকশন সঠিক সময়ে পাচ্ছে না বলেও অভিযোগ আসছে।

এ বিষয়ে রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান নাসের শাহরিয়ার জাহেদী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে এই ইনজেকশন চাহিদা বেড়েছে। আমার কাছেও মাঝে মাঝে এই ইনজেকশনের জন্য ফোন আসে। আমরা সুইজারল্যান্ড থেকে সরাসারি আমদানি করি।’

চাহিদা তুলনায় আমদানি কম হচ্ছে কেনো এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ইনজেকশনটি বেশি করে আমদানি করতে চাহিদাপত্র দিয়েছি। তবে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই মুহূর্তে চাহিদা অনুযায়ী ইনজেকশনটি দিতে পাচ্ছে না সুইজারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি।’

করোনা মধ্যে এই ইনজেকশনটি দাম বাড়ছে কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ইনজেকশনটি দাম বাড়ায়নি। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এই ইনজেকশনের দাম আমরা ঠিক করি না। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ঠিক করে দেয়। তাদের নির্ধারিত দামে আমরা এই ইনজেকশনটি বিক্রি করছি।’

সংকট সমাধনে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আজ রাতে ইনজেকশনের নতুন চালান দেশে আসার কথা রয়েছে। চলে এলে আগামীকাল বিকাল থেকে ইঞ্জেকশনটি দিতে পারব।’ রোগীরা যেন সহজে তা পেতে পারে সেজন্য ধানমন্ডি ও উত্তরা এই দুইটি বুথে অ্যাক্ট্রেমরা বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর